ডাকসুতে পুনঃভোটের সুযোগ নেই: বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ

ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্যানেলগুলো অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে পুনঃভোটের দাবি জানালেও তা নাকচ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2019, 08:37 AM
Updated : 12 March 2019, 09:35 AM

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচন হয়ে গেছে। ফলাফলও ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও ডাকসুর গঠনতন্ত্র- এগুলো নিয়ে চলতে হবে।”

আর উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ পুনঃভোটের দাবি সরাসরি নাকচ করে বলেছেন, “নির্বাচন নতুন করে হওয়ার কোনো সুযোগ আর নেই।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসু ও হল সংসদগুলোর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত নির্বাচন সোমবার শেষ হয় অনিয়মের নানা অভিযোগ এবং অধিকাংশ প্যানেলের প্রার্থীদের বর্জনের মধ্যে দিয়ে।

ছাত্রদল, বাম জোট, কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দুটি প্যানেল ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে পুননির্বাচনের দাবি জানায়।

রাতে ফল ঘোষণার পর দেখা যায়, ডাকসুতে ভিপি ও সমাজসেবা সম্পাদক ছাড়া সবগুলো পদেই জয়ী হয়েছেন সরকার সমর্থক সংগঠন ছাত্রলীগের প্রার্থীরা। আর ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মোর্চা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্রার্থী নূরুল হক নূর।

ভিপি পদে পরাজয় মানতে না পেরে মঙ্গলবার সকাল থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নেতা নূরুল হক নূরকে ভিপি পদে জয়ী করতে ‘অনেক বড় জালিয়াতি’ হয়েছে অভিযোগ করে ওই পদে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছেন তারা।

অন্যদিকে বাম জোট, সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জোটও ক্যাম্পাসে আলাদাভাবে মিছিল সমাবেশ করছে। তাদের ডাকে মঙ্গলবার সকাল থেকে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ে।

ভোট চলাকালে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে বস্তাভর্তি ব্যালট এবং রোকেয়া হলে ট্রাংক ভর্তি ব্যালট পাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপ উপাচার্য অধ্যাপক সামাদ মঙ্গলবার নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “দুটি হলের একটিতে অনিয়মের প্রমাণ পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি। তবে অপর একটি হলে (রোকেয়া হলে) যা হয়েছে, সেটি ছিল হাঙ্গামা। সেখানে কোনো অনিয়ম হয়নি।”

ডাকসু নির্বাচনের অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগ তদন্তে মুহাম্মদ সামাদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি ‘তথ্যানুসন্ধান দল’ গঠন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তিনি বলেন, এই তদন্ত দল ‘অল্প কিছু দিনের মধ্যে’ তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।

কোটা আন্দোলনকারীদের নেতা নুরুল হোসেন নূরুকে ‘পরিকল্পিতভাবে’ ভিপি পদে জিতিয়ে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে অধ্যাপক সামাদ বলেন, “অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন (ওএমআর) মেশিনে ভোট গণণা হয়েছে। এখানে এই অভিযোগের কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া কোটা আন্দোলনের প্রায় সব দাবিই তো প্রধানমন্ত্রী মেনে নিয়েছেন। কোটা আন্দোলনের কথা বলছে, কিন্তু কোটা আন্দোলনের অবশেষ আর কিছু নেই এখন।”