শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পিছু হটল জগন্নাথ কর্তৃপক্ষ

যৌন হয়রানিতে দোষী সাব্যস্ত এক শিক্ষককে তিরস্কারের ‘লঘু শাস্তি’ দেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2018, 11:42 AM
Updated : 30 April 2018, 02:49 PM

বিতর্কের অবসান ঘটাতে ওই শিক্ষক নাট্যকলা বিভাগের চেয়্যারম্যান আব্দুল হালিম প্রামাণিক সম্রাটের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ বহাল রেখে নতুন করে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান।

গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায়  সহযোগী অধ্যাপক হালিমকে কেবল তিরস্কার ও পদোন্নতি দুই বছর বিলম্বিত করার শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।

সিন্ডিকেটের ওই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা। সোমবার সকালেও মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানায় তারা।

প্রতিবাদী কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা

এরপর উপাচার্য মীজানুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি তার ক্ষমতাবলে সিন্ডিকেটে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন। পাঁচ সদস্যের নতুন তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, “তদন্ত কমিটির (আগে গঠিত) দেওয়া তদন্ত মোতাবেক তাকে লঘু দণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ওই দুই নারী শিক্ষার্থীর সাথে আরও কয়েকটি যৌন হয়রানিমূলক অভিযোগ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ৭৭তম সিন্ডিকেটে নেওয়া সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১/১০ ধারা অনুযায়ী উপাচার্যের নিজস্ব ক্ষমতাবলে বাতিল করা হয়।”

পাঁচ সদস্যের নতুন তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমসের অধ্যাপক ড. সওকত জাহাঙ্গীরকে। সদস্য আছেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফরিদা আক্তার খানম, লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন।

উপাচার্য জানান, কমিটিতে আরও দুজন অধ্যাপক নেওয়া হবে; একজন অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকে এবং অন্যজন অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল হালিমের পক্ষ থেকে।

আব্দুল হালিম প্রামাণিক

গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের কাছে নাট্যকলা বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান হালিম প্রামাণিকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন তার বিভাগের এক ছাত্রী।

পরদিন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের কথা জানানো হয়।

বরখাস্তের ওই ঘোষণা আসার পর প্রশাসনের কাছে হালিম প্রামাণিকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন তার বিভাগের আরেক ছাত্রী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল’ প্রথমে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় আরেকটি উচ্চতর তদন্ত কমিটি করে, তাদের সুপারিশে সিন্ডিকেটে তাকে ‘লঘু দণ্ড’ দেওয়া হয়।

এই তদন্ত কমিটির কার্যক্রম নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের পর তারা কর্মসূচিতে নামেন।