নভেম্বরে ঢাকায় বসছে পোশাক খাতের ‘মেগা ইভেন্ট’

‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইক’ নামের এ আয়োজনে উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় এ খাতকে এগিয়ে নেবে বলে আশা আয়োজকদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2022, 03:28 PM
Updated : 22 July 2022, 04:03 PM

তৈরি পোশাক খাতের বৈশ্বিক সব অংশীজনদের নিয়ে আগামী নভেম্বরে ঢাকায় সপ্তাহব্যাপী বড় ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।

‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইক’ শিরোনামের এ আয়োজনে দেশি বিদেশি উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় এ খাতের টেকসই অগ্রগতিকে এগিয়ে নেবে বলে আশা আয়োজকদের।

আগামী ১২ থেকে ১৮ নভেম্বর ঢাকায় প্রথমবারের মত মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিংয়ের একটি সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন গত ১৪ মে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন আয়োজকরা।

বাংলাদেশের পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের (বিএই) সঙ্গে এ আয়োজনে রপ্তানিকারক ও শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ ছাড়াও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপারেল ফেডারেশন (আইএএফ) যুক্ত আছে।

এ সম্মেলনের বিষয়ে সম্প্রতি অতিথিদের কাছে পাঠানো বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের চিঠিতে আশা করা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটির উদ্বোধন করবেন।

১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরে ৩১ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে পোশাক শিল্পের বিশ্ববাজারে যুক্ত হয় বাংলাদেশ। ওইসময় দেশের মোট ৮১ কোটি ১০ লাখ ডলার রপ্তানির ৪ শতাংশ ছিল পোশাক পণ্য।

এরপর থেকে গত চার দশকে পোশাক দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্যে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ।

গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, যা মোট রপ্তানির ৮১ দশমিক ৮১ শতাংশ। আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

শুধু রপ্তানিতেই এগিয়েছে তা নয়, দেশের পোশাক খাত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বড় ধরনের সংস্কারের মধ্যে দিয়ে গেছে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধবও হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের স্বীকৃতি অনুযায়ী, বিশ্বের সেরা ১০টি সবুজ কারখানার মধ্যে ৭টি রয়েছে বাংলাদেশে। এর বাইরেও ৫০টি কারখানা প্লাটিনাম, ১০১টি কারখানা গোল্ড, ১০টি কারখানা সিলভার ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছে।

বিভিন্ন ধরনের সংস্কারের কথা তুলে ধরে অতিথিদের লেখা চিঠিতে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, শ্রম নিরাপত্তা, শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং টেকসই পরিবেশ সুরক্ষার দিকেও এগিয়েছে বেশ। সপ্তাহব্যাপী ওই অনুষ্ঠানে এসব অগ্রগতি কথা স্টেকহোল্ডারদের সামনে তুলে ধরা হবে।

সম্মেলনের সাতদিনের আয়োজনে থাকবে তৃতীয় ঢাকা অ্যাপারেল সামিট, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপারেল ফেডারেশনের ৩৭তম ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন কনভেনশন, ঢাকা অ্যাপারেল এক্সপো, বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো, দ্য সাসটেইনেবলিটি লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড, সাসটেইনেবল ডিজাইন অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডসহ বিভিন্ন পৃথক অনুষ্ঠান। ইতোমধ্যে মেইডইনবাংলাদেশইউক নামের একটি ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “আমরা খুবই আশাবাদী যে, সপ্তাহব্যাপী এই মেগা ইভেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ধারাবাহিক অগ্রগতির প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠবে। এ খাতে বিশ্বের প্রধান নীতি নির্ধারকদের একত্র করে আমরা শিল্পের ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়েও কথা বলব।

“সরাসরি বিক্রি বাড়ানো এই আয়োজনের উদ্দেশ্য নয়। বরং শিল্পের সর্বস্তরে আমাদের বর্তমান সক্ষমতা তুলে ধরার চেষ্টা করবো আমরা।“

আয়োজনে আইএএফ দেশে এ খাতের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সহযোগিতায় প্রথমবারের মত বাংলাদেশে ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন কনভেনশনের আয়োজন করবে। আন্তর্জাতিক ফেডারেশনটির ৫০ বছর পূর্তির মাহেন্দ্রক্ষণে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের এ আয়োজনে যুক্ত হয়েছে তারা। বিশ্বের ফ্যাশন স্টেকহোল্ডারদের সর্বশেষ নীতি কৌশলগুলো তুলে ধরতে বিভিন্ন দেশে এধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে আইএএফ।

এর আগে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে আইএএফর মহাসচিব ম্যাথিয়াস ক্রিয়েটি বলেছিলেন, এই কনভেনশনে দেড়শ প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। এ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা সরাসরি বাংলাদেশকে দেখতে পাবেন। বাংলাদেশও তাদের সক্ষমতা, চ্যালেঞ্জ ও সমাধানগুলো তুলে ধরতে পারবে, যা তৈরি পোশাকের মূল্য বাড়াতে সহায়ক হবে।