‘মর্টগেজ ডেটা ব্যাংকে’ ২২ হাজার ২০০ জমির এবং ‘মামলা ব্যবস্থাপনা সিস্টেমে’ শুরুতেই প্রায় ২১ হাজার মামলার তথ্য।
Published : 21 Nov 2022, 09:55 PM
একই জমি জালিয়াতির বারবার দেখিয়ে ঋণ নেওয়ার পথ বন্ধ করতে চালু মর্টগেজ ডেটা ব্যাংকে শুরুতেই ৭২টি ব্যাংক ও ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বন্ধক হিসেবে থাকা ২২ হাজার ২০০ জমির তথ্য যুক্ত করা হয়েছে।
সোমবার এ তথ্য ভাণ্ডারের পাশাপাশি ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় জমি সংক্রান্ত সব মামলা সমন্বিত ব্যবস্থায় পরিচালনায় ‘মামলা ব্যবস্থাপনা সিস্টেম’ উদ্বোধন করা হয়। এ ভাণ্ডারে জমি সংক্রান্ত প্রায় ২১ হাজার মামলার তথ্য যুক্ত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, উভয় ব্যবস্থায় সব উপাত্ত এন্ট্রি করা হবে এবং এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
‘মর্টগেজ ডেটা ব্যাংকে’ জামানত বা বন্ধক হিসেবে রাখা সম্পত্তির তথ্য জানাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মাধ্যমে কেউ জমি বা সহায়ক জামানত হিসবে রেখে ঋণ নিতে চাইলে তা যাচাই করে দেখা সম্ভব হবে।
এ দুই তথ্য ভাণ্ডারের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘‘এখন থেকে এক জমি বারবার বন্ধক রাখা যাবে না, সেদিন শেষ হল। এর ফলে জমি নিয়ে ফটকাবাজি করার দিন শেষ।’’
ঢাকার তেজগাঁওয়ে ভূমি ভবন মিলনায়তনে এ দুই কার্যক্রম উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, ‘‘এক জমি কয়েক জায়গায় বন্ধক দেওয়া হত। মর্টগেজের উপর ভিত্তি করে ব্যাংকে ঋণ নেওয়াসহ অনেক লেনদেন হয়। মর্টগেজ ডাটা ব্যাংক এজন্য ব্যাংকিং তথা আর্থিক ব্যবস্থায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’’
জামানতে জালিয়াতি: আসছে ‘মর্টগেজ ডেটা ব্যাংক’
মামলা ব্যবস্থাপনা সিস্টেম প্রসঙ্গে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশন এমনভাবে করছি যেন আগামী প্রজন্ম ভূমি নিয়ে হয়রানিতে না পড়েন।“
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান সোলেমান খান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
যেভাব কাজ করবে মর্টগেজ ডেটা ব্যাংক
বন্ধক রাখা (মর্টগেজড) জমি একাধিকার বন্ধক, কেনাবেচা বা নামজারির সময় তথ্য যাচাই করা যাবে।
ব্যাংক, ভূমি মন্ত্রণালয়, সাব রেজিস্ট্রার অফিস ও নাগরিকদের যে কেউ জমির বন্ধক সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করতে পারবেন।
এ তথ্য ভান্ডারে লিপিবদ্ধ থাকা জমি নতুন করে বন্ধক, ক্রয়-বিক্রয় এবং নামজারি করা সম্ভব হবে না।
জমি, ক্রয়-বিক্রয় বা নামজারির আগে তা যাচাই করে দেখবে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস।
অর্থঋণ আদালতের রায়ের ভিত্তিতে নামাজারি সহজ হবে এবং সকল ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চলমান ও ভবিষ্যত বন্ধকি জমির অনলাইন ডাটাবেজ হিসেবে ব্যবহার করা হবে সিস্টেমটি।
https://mortgage.land.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে তা যাচাই করে দেখা সম্ভব হবে।
এছাড়া জাতীয় ভূমিসেবা কাঠামো land.gov.bd থেকে মর্টগেজ ডেটা ব্যাংক সিস্টেমে প্রবেশ করা যাবে। ভূমি সেবা গ্রহীতারা ১৬১২২ নম্বরে কল করেও পরিষেবাটি নিতে পারেন বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
একই প্লাটফর্মে ভূমি অফিস ও আদালত
দেশে জমি সংক্রান্ত সব ধরনের মামলার তথ্য একই প্লাটফর্মে যুক্ত করা হবে ‘মামলা ব্যবস্থাপনা সিস্টেম’ এ। এর মাধ্যম সব ভূমি অফিস ও আদালত একই প্ল্যাটফর্মে আসবে।
এর মাধ্যমে দফাওয়ারি জবাব প্রস্তুত ও দাখিলের পুরো প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন হবে।
ভূমি সেবা গ্রহীতা মামলার অবস্থা এবং শুনানির তারিখ, কৌঁসুলি শুনানির তারিখ ও আদেশ পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
ভূমি কর্মকর্তা মামলার তথ্য ও অগ্রগতি দেখতে পারবেন যেকোনো স্থান থেকেই অনলাইনে।
এ সংক্রান্ত case.gov.bd ওয়েব ঠিকানায় গিয়ে তা দেখতে পারবেন যে কেউ।
এছাড়া জাতীয় ভূমিসেবা কাঠামো land.gov.bd থেকে মামলা ব্যবস্থাপনা সিস্টেমে প্রবেশ করা যাবে। ১৬১২২ নম্বরে কল করেও পরিষেবাটি নিতে পারেন।