বাজারে আসতে শুরু করা মুড়িকাটা ও আগাম মওসুমের আবাদ থেকে এবার প্রায় ৮ লাখ টন পেঁয়াজ পাওয়ার আশা কৃষি মন্ত্রণালয়ে।
Published : 10 Dec 2023, 09:24 PM
বাজারে মুড়িকাটা ও আগাম মওসুমের পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। পুরোদমে এমন পেঁয়াজ ওঠা শুরু হলে তা আগামী তিন মাসের চাহিদা পূরণ করতে পারবে বলে আশা কৃষি মন্ত্রণালয়ের।
দেশে প্রতি মাসে প্রায় দুই লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা থাকলেও আগামী তিন মাসে মুড়িকাটা ও আগাম মওসুমের আবাদ থেকে প্রায় আট লাখ টন পেঁয়াজ পাওয়ার আশা করছে এ মন্ত্রণালয়।
তবে আগাম পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলেও তা এ পণ্যের চড়া বাজারে এখনও তেমন একটা ভূমিকা রাখতে পারছে না। গত শনিবার থেকে দেশি পেঁয়াজের দামের কেজি ২০০ টাকা ছাড়ায়। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম গিয়ে ঠেকেছে ১৯০ টাকায়।
ভারত নতুন করে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলে রাতারাতি দেশের বাজারে দাম বেড়ে এ পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন পেঁয়াজ দেশের বিভিন্ন স্থানের বাজারে আসার বার্তা দিল কৃষি মন্ত্রণালয়।
রোববার দেশি পেঁয়াজ ২০০ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়।
এদিকে হঠাৎ চড়ে যাওয়া পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ঢাকাসহ ৪০ জেলায় একযোগে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের ৪৩টি দল অভিযানকালে ৮০টি কোম্পানিকে প্রায় পৌনে চার লাখ টাকা জরিমানা করে।
রোববার রাতে কৃষি মন্ত্রণালয় এক বার্তায় জানিয়েছে, দেশে সাম্প্রতিক কয়েক মাসে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিও বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রথম পাঁচ মাসে পাঁচ লাখ ৭১ হাজার ৫৩৪ টন পেঁয়াজ দেশে চলে এসেছে যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে এক লাখ ৫৫ হাজার ২২৬ টন বেশি।
২০২২ সালের এ সময়ে চার লাখ ১৬ হাজার ৩১০ টন পেঁয়াজ আমদানি করে দেশীয় চাহিদা মেটানো হয়েছিল।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশে প্রতিবছর ২৫ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। দেশি উৎপাদনের পাশাপাশি প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৬ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের বার্তায় বলা হয়, প্রতি বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয় প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয় প্রায় ৮ লাখ টন। এবছর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হবে প্রায় ৫০ হাজার টন।
এই মুড়িকাটা ও গ্রীষ্মকালীন নতুন পেঁয়াজ ক্ষেত থেকে তোলা ও বাজারে আসা শুরু হয়েছে, যা আগামী তিন মাস চলমান থাকবে।
আগাম মওসুমের পেঁয়াজ শেষ হওয়ার আগেই মূল মওসুমের পেঁয়াজ এসে যাবে উল্লেখ করে কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, এ বছর ২৬ লাখ থেকে ২৮ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হতে পারে।
পেঁয়াজের ‘বিকল্প বাজারে’ যাওয়ার পরামর্শ এফবিসিসিআই সভাপতির
ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ থাকায় দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্য সহনীয় রাখতে ‘বিভিন্ন বিকল্প দেশ থেকে আমদানি করে সাপ্লাই চেইন স্বাভাবিক করার’ পরামর্শ দিয়েছেন ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।
নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করে স্বাভাবিক মূল্যে বিক্রিতে রোববার ব্যবসায়ীদের এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পেঁয়াজের দাম না বাড়ানোর অনুরোধ করে তিনি বলেন, “নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত পর্যন্ত সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রয়োজনীয় পণ্য হল পেঁয়াজ। নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থে যারা দেশের সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলেছেন, তারা কোনোভাবেই দেশের ব্যবসায়ী সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে না।”