অনেক বেশি সুযোগ নিয়েছে ব্যবসায়ীরা: টিপু মুনশি

বাণিজ্যমন্ত্রী বলছেন, তেলের দামের প্রভাবে পরিবহন খরচের কারণে প্রতি কেজিতে চালের দাম ৫০ পয়সা বাড়তে পারে, কিন্তু ব্যবসায়ীরা ৪ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2022, 09:23 AM
Updated : 17 August 2022, 09:23 AM

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় নিত্যপণ্যের দাম যতটা বড়ার কথা ছিল, ব্যবসায়ীরা তার থেকে ‘অনেক বেশি’ সুযোগ নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেন, “ব্যবসায়ীরা সুযোগ যখন নেয়, সবাই একবারে লাফ দিয়ে নেয়। কিন্তু আমরা তো এসব একবারে শেষ করতে পারব না। তাদের সাথে বসে ঠিক করতে হবে। আমাদেরকে একটু সময় দেন। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি।”

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিচ্ছে মন্তব্য করে টিপু মুনশি বলেন, “হঠাৎ করে সুযোগ কেউ কেউ নিয়েছে। যে পরিমাণ বাড়ার কথা, তার থেকে অনেক বেশি সুযোগ নিয়েছে- এটা সত্যি কথা। আমরা চেষ্টা করছি।”

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “আমাদের কাছে হিসাব আছে। ধরেন তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচের জন্য চাল প্রতি কেজিতে ৫০ পয়সা করে বাড়তে পারে। সেখানে ব্যবসায়ীরা চার টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে।

“এখানে কোনো লজিক আছে? নাই। তার মানে সুযোগটা নিয়ে নিয়েছে। আমাদেরকে একটু সময় দেন। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি।”

গত ৫ অগাস্ট ডিজেল ও কেরোসিনের দাম একলাফে ৪২.৫% বাড়ানো হয়, তাতে প্রতি লিটারের দাম হয় ১১৪ টাকা। পেট্রোলের দাম ৫১.১৬% বেড়ে প্রতি লিটার ১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৫১.৬৮% বেড়ে প্রতি লিটার ১৩৫ টাকা হয়।

ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বাজার দর আগে থেকেই চড়ে ছিল, সর্বশেষ এই মূল্যবৃদ্ধিতে নিম্নবিত্তের মানুষের জীবন আরও কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়ে যায়।

তেলের দাম বাড়ার কারণে বেড়ে যায় গণপরিবহনের ভাড়া। পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে বাজারে চড়তে থাকে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম।

মুরগি, ডিম, চাল, আটা, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, কাঁচামরিচ, চিনিসহ বেশ কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যও বেড়েছে, যা নিয়ে বাজারে নিম্মমধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের হাহাকার যেন বাড়ছেই।

ব্যবসায়ীরাও বলছেন, তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পরিবহন ব্যয় বেড়েছে, তাতে প্রায় সব ধরনের নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে।

নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় মানুষ যে কষ্টে আছে, তা স্বীকার করে নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের যেটা দেখা দরকার, কষ্টটা লাঘব করার জন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী কী চেষ্টা করছেন।”

সব কিছু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করে না মন্তব্য করে টিপু মুনশি বলেন, “আমি সচিবকে বলেছি, যে যে মন্ত্রণালয়ে আছেন, সবাইকে চেষ্টা করতে হবে। ডলারের দাম হঠাৎ করে কত বেশি। খুব চেষ্টা করা হচ্ছে, কীভাবে কী করা যায়।”

‘অসাধু’ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “সেটা আমরা ব্যবস্থা নেব। বলছি, সব কিছুতেই তো সুযোগ নিচ্ছে। সেটা আমরা দেখবে।

“সুযোগ যখন নেয়, সবাই একবারে লাফ দিয়ে নেয়। কিন্তু আমরা তো এসব একবারে শেষ করতে পারবে না। তাদের সাথে বসে সেটেল করতে হবে।”

কবে নাগাদ বাজার স্বাভাবিক হতে পারে এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “সেটা বলা যাবে না। তবে আমরা খুব আশাবাদী, অক্টোবরের মধ্যে কিছুটা কমে আসবে।

“কতোগুলো ফ্যাক্টর কাজ করে, আমি জানি না পুতিন সাহেব কবে যুদ্ধ বন্ধ করবেন। সেটা তো আমার হিসেবের মধ্যে নেই।”

আরও খবর:

Also Read: তেলের দামের খড়্গ নিত্যপণ্যের বাজারে

Also Read: ডিজেল ও কেরোসিনের দাম এক ধাক্কায় ৪২.৫%; অকটেন ও পেট্রোলে ৫১% বাড়ল