তবে প্রবাসী আয় হিসেবে রেমিটেন্স দেশে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া দরের সঙ্গে আরও ২-৩ টাকা বাড়তি দিচ্ছে ব্যাংকগুলো।
Published : 24 Jun 2024, 11:03 PM
রেমিটেন্স ছাড়া রপ্তানি আয়সহ সব ধরনের বৈদেশিক আয় দেশে আনতে আনুষ্ঠানিক বিনিময় হার বেড়ে সর্বোচ্চ ১১৮ টাকা হয়েছে।
এর মানে হচ্ছে, বিদেশ থেকে কোনো মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আনলে প্রতি ডলারের বিপরীতে গ্রাহক পাবেন সর্বোচ্চ ১১৮ টাকা।
তবে প্রবাসী আয় হিসেবে রেমিটেন্স দেশে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া দরের সঙ্গে আরও ২-৩ টাকা বাড়তি দিচ্ছে ব্যাংকগুলো।
সোমবার ব্যাংক খাতে ডলারের সর্বোচ্চ বিনিময় হার ১১৮ টাকা বলে তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে গত দেড় মাসে ব্যাংক খাতে ডলারের দর বাড়ল ১ এক টাকা বা শূন্য দশমিক ৮৫ শতাংশ।
আমদানি পর্যায়, নগদসহ অন্যান্য খাতে ডলারের দর ব্যাংকগুলো আনুষ্ঠানিক দরের চেয়ে বেশি রাখছে বলে ব্যবসায়ীদের পুরোনো অভিযোগ এখনও আছে।
গত ৮ মে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি ‘ক্রলিং পেগ’ চালু করার দিনে ডলারের দর ১১৭ টাকা ঠিক করে দিয়েছিল আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর পরামর্শ মেনে এখন থেকে এ পদ্ধতিতেই ডলারের দর নির্ধারিত হচ্ছে।
এতে গত ৮ মে এক দিনেই ডলারের দর ৭ টাকা বেড়েছিল। এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় দর ব্যাংক খাতে ছিল সর্বোচ্চ ১১০ টাকা।
‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের একটি মধ্যবর্তী দর ঠিক করে দেয়। এর সঙ্গে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দরে লেনদেন করে ব্যাংকগুলো।
গত দেড় মাসে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দরের মধ্যে ব্যবধান থাকলেও চাহিদা বেশি থাকায় সোমবার ডলারের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দর ১১৮টাকা ছিল বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছ থেকে জানা গেছে।
অতীতে বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিলেও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি ডলারের দর কত হবে, তা ব্যাংকগুলোকে মৌখিকভাবে বলে দিত।
সে ক্ষেত্রে ঘোষিত দরের সঙ্গে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ৫০ পয়সা যোগ-বিয়োগ করে বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার সুযোগ দিত কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালু হওয়ার পর এখনও সেই পদ্ধতিতে চলছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোভিড মহামারী থেকে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সময় ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে ডলারের চাহিদা বাড়তে থাকে।
পরের বছর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেইনে হামলা করে বসলে আন্তর্জাতিক বাজারের দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি হওয়ায় ডলারের চাহিদা আরও বেড়ে যায়। তখন থেকে সরবরাহ সংকটে দাম বেড়ে ডলারের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়।
বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা মেটাতে আইএমএফ এর কাছে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ঋণ চুক্তিতে যায় বাংলাদেশ।
ঋণ চুক্তিতে যাওয়ার পরে শর্ত অনুযায়ী বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার অংশ হিসেবে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন-বাফেদা ও ব্যাংকের নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ-এবিবি ডলারের দর নির্ধারণ করছিল গত ৭ মে পর্যন্ত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ জুন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতি ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস হিসাবে ২৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার।
আইএমএফ স্বীকৃত বিপিএম৬ পদ্ধতির গ্রস হিসাবে তা ছিল ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার।