রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে এই নিলামে চারটি বেসরকারি অপারেটর মোট মেগাহার্টজ তরঙ্গ কেনার জন্য ডাকে অংশ নিলেও বিটিআরসির হাতে বাড়তি থাকা তিনটি স্লটে ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কেনার আগ্রহ দেখায়নি কেউ। ফলে মোট তরঙ্গের ৩৮ শতাংশই অবিক্রিত থেকে গেছে।
নিলামের পর বিটিআরসি চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “পরে চাইলে আর এ অপারেটরদের এ তরঙ্গ দেয়া হবে না, তবে পরবর্তীতে চাহিদা অনুযায়ী এ তরঙ্গ বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ অবিক্রিত থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “আমি আগেই ধারণা করেছিলাম, এ পরিমাণ তরঙ্গ অবিক্রিত থেকে যাবে।”
দেশে মোবাইল ব্যবহারকারীদের মধ্যে ২০ শতাংশের হাতে এখন থ্রিজি প্রযুক্তি ব্যবহারোপযোগী হ্যান্ডসেট রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রাহক সংখ্যা বিবেচনা করেই অপারেটররা তরঙ্গ কিনেছে।
“অবিক্রিত তরঙ্গ রয়েছে এটি বড় কথা নয়, ২৫ মেগাহার্টজ বিক্রি হয়েছে এটিই বড় কথা।”
যে পরিমাণ অর্থ দিয়ে অপারেটররা তরঙ্গ কিনেছে তা শেষ পর্যন্ত তাদের ব্যবসার জন্য সহায়ক হবে বলেই মনে করেন বিটিআরসি প্রধান।
সুনীল কান্তি বোসের মতে, নতুন কোনো অপারেটর নিলামে না আসায় প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়নি।
“গ্রামীণ ফোন তাদের গ্রাহক সংখ্যার (৪ কোটি ৪৬ লাখ) বিবেচনায় ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনেছে, যা ঠিকই আছে।”
২ কোটি ৭৩ লাখ গ্রাহক নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলালিংক ৫ মেগাগার্টজ তরঙ্গ দিয়ে মানসম্মত সেবা দিতে পারবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে তারা কোয়ালিটি সার্ভিস দিতে পারবে কিনা।”
প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য ২ কোটি ১০ লাখ ডলার দামে এই নিলাম থেকে সরকারের মোট আয় হচ্ছে ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা।
ওই দরে ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনছে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণ ফোন। অর্থাৎ, প্রতিষ্ঠানটি থ্রিজি লাইসেন্স নিচ্ছে ২১ কোটি ডলারে।
এছাড়া প্রতি মেগাহার্টজ একই দরে পাঁচ মেগাহার্টজ করে তরঙ্গ কিনছে অপর তিন বেসরকারি অপারেটর বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল।
থ্রিজি নীতিমালা অনুসারে অপারেটররা ১৫ বছরের জন্য এই লাইসেন্স পাচ্ছে।
এছাড়া থ্রিজি নীতিমালা অনুযায়ী রাষ্ট্রায়াত্ত অপারেটর টেলিটক নিলামে ওঠা দামের সমান অর্থ দিয়ে ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের থ্রিজি সেবা দেবে।
গত ২৯ অগাস্ট নিলামে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিড আর্নেস্ট মানি জমা দেয় বেসরকারি চার মোবাইল ফোন অপারেটর। নিলামের জন্য যোগ্য বিবেচিত হলেও দেশের প্রথম ও একমাত্র সিডিএমএ অপারেটর সিটিসেল ‘আর্থিক সমস্যার’ কারণে টাকা জমা দিতে ব্যর্থ হয়ে নিলাম থেকে ছিটকে পড়ে।