ফের বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ফের বেড়েছে পেঁয়াজের দাম; এক সপ্তাহের ব্যবধানে রান্নায় বহুল ব্যবহৃত এ উপকরণটির দাম অন্তত ১০ টাকা বেড়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2022, 12:57 PM
Updated : 24 June 2022, 12:57 PM

গত কয়েক মাস ধরেই পেঁয়াজের দাম ওঠা-নামা করছিল। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজ ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগের সপ্তাহেও ৩৫-৪০ টাকা ছিল।

বাজারে অল্পস্বল্প আমদানি করা পেঁয়াজ থাকলেও সেগুলো বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে ৪৫-৫০ টাকা দিয়েও আমদানি করা পেঁয়াজ কেনা গেছে

তবে রসুনের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে এই এক সপ্তাহে। শুক্রবার প্রতি কেজি আমদানি করা রসুন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে; দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে।

গত সপ্তাহেও আমদানি করা রসুনের দাম ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা এবং দেশি রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ না থাকায় হঠাৎ করে দাম বেড়েছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় এবং বন্যার কারণে দাম বেড়েছে বলে তাদের ভাষ্য।

দেশের পেঁয়াজ চাষীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে গত মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এ পণ্যটি আমদানির অনুমতি দেয়নি সরকার।

শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচা কাঁচা বাজার, শান্তিনগর, মালিবাগ, মগবাজার, রামপুরা, উত্তর বাড্ডাসহ বিভিন্ন খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যাপ্ত পরিমাণ থাকলেও আমদানি করা পেঁয়াজ কমই দেখা গেছে।

রামপুরার বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা বলেন, “বাজারে একেক দিন একের জিনিসের দাম বাড়ে, কমে তো না। পেঁয়াজের দাম কয়েক মাস স্থিতিশীল ছিল, এখন আবার বাড়তে শুরু করেছে। পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।”

ক্রেতাদের অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে মালিবাগ বাজারের দোকানি হারুন-অর রশিদ বলেন, “গত দুই দিন ধরে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। পরশু দিন কেজিতে ৫ টাকা এবং গতকাল আরও ৫ টাকা বেড়েছে। এর আগে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। আজকে ৫০ টাকা।”

কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজ নেই, এটা দাম বৃদ্ধির একটা কারণ। ইন্ডিয়া থেকে আমদানি বন্ধ করে দিলে দাম হু হু করে বেড়ে যায়, এটাই আমাদের এখানে নিয়মে পরিণত হয়েছে।”

শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাজেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কমে এসেছে, যে কারণে দাম বেড়েছে।

“তার মনে, নতুন পেঁয়াজ উঠার পর এত দিন পেঁয়াজ চাষিরা তেমন লাভবান হয়নি। দাম কিছুটা বেড়েছে, যে কারণে এখন তারা ২/৪ টাকা লাভ করতে পারছে।”

পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে জানিয়ে এ ব্যবসায়ী বলেন, “দাম বেড়ে আমাদের এখানে এখন ৩৮ থেকে ৪২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।”

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকার বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “যদি আমদানি চালু করা হয় তাহলেও যে খুব প্রভাব পড়বে, অর্থাৎ দাম কমবে- তা হয়ত না। যেমন মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আনলে আমাদের পরতা (খরচসহ কেনা দর) ৭০ টাকা পড়ে। যে কারণে এই পেঁয়াজ এনে ব্যবসায়ীরা লাভবান হতে পারবে না।”

গত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে পেঁয়াজের দর ছিল ২৮ থেকে ৩০ টাকা। এর এক মাস পর ভরা মৌসুম ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহের পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ বেড়ে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা বিক্রি হয়েছিল। এর পরের মাস থেকে দাম কিছুটা কমে গত সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছিল।

জুনের প্রথম সপ্তাহে আমদানি করা রসুনের কেজি ২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। আমদানি কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছিল বলে ব্যবসায়ীরা তখন জানিয়েছিলেন।