উৎসে কর আগের মতোই ০.৫ শতাংশ চায় বিজিএমইএ

তৈরি পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর বাড়লে এ শিল্পের জন্য ‘অত্যন্ত দুরুহ’ হয়ে উঠবে দাবি করে আগামী পাঁচ বছর তা না বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে বিজিএমইএ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 June 2022, 04:55 PM
Updated : 10 June 2022, 04:55 PM

নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর শুক্রবার এক প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেওয়া সুবিধার জন্য সরকারের প্রশংসা করে এমন আহ্বান জানায় তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের এ সংগঠনটি।

বিজিএমইএ জানায়, ২০২২-২৩ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে পোশাক রপ্তানির উপর উৎসে কর শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

তাদের দাবি, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এ শিল্পের জন্য প্রস্তাবিত এ কর হার ‘অত্যন্ত দুরুহ’ হয়ে উঠবে।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এম মান্নান কচির পাঠানো ওই প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, “বর্তমান প্রেক্ষাপটে পোশাক শিল্পে উৎসে কর বর্তমানে যে অবস্থায় রয়েছে, সে অবস্থায় রাখার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী সুবিবেচনায় রাখবেন।

“আমাদের একান্ত অনুরোধ, রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ আগামী ৫ বছর পর্যন্ত কার্যকর রাখলে শিল্পটি বর্তমান সংকটকালীন সময়ে স্বস্তিতে থাকবে।”

গত অর্থবছরে ৩১ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার থেকে চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২) পোশাক রপ্তানিতে আয় ৪১ বিলিয়ন ডলার উন্নীত করার আশা প্রকাশ করেছে বিজিএমইএ।

সংগঠনটি বলছে, “এভাবে যদি আমরা রপ্তানি বাড়াতে পারি, তাহলে কর হার না বাড়িয়েও রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব। এতে করে সামষ্টিক অর্থনীতি উপকৃত হবে।”

এর বাইরে পোশাক খাতের জন্য সহায়ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে শুল্ক ও কর ছাড় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ভূয়সী প্রশংসা করেছে বিজিএমইএ।

এসব পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে:

>> বিজিএমইএ’র অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে রপ্তানির জন্য সাব-কন্ট্রাক্টের বিপরীতে ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান করা।

>> নগদ সহায়তা চলমান রাখা।

>> টেক্সটাইল বা বস্ত্রখাতের কর্পোরেট কর হার আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া।

>> ম্যান মেইড ফাইবার ও অন্যান্য কৃত্রিম আঁশের তৈরি সুতার ওপর ভ্যাটের পরিমাণ প্রতি কেজিতে ৬ টাকা থেকে কমিয়ে ৩ টাকা করা।

>> পলিপ্রপাইলিন স্ট্যাম্পল ফাইবার উৎপাদনের উপর ভ্যাট অব্যাহতি ও এর প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানির ওপর আগাম কর অব্যাহতি।

>> স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (এসটিপি) আমদানি শুল্ক ২৫% থেকে কমিয়ে ৫% করা।

>> মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের চার্জ আয়করের বাইরে রাখার প্রস্তাব করা।

>> ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডে (ডব্লিউপিপিএফ) নিয়োগদাতার অনুদানকে আয়করের আওতামুক্ত করার প্রস্তাব।

>> প্রতিবন্ধী বা তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের নিয়োগের মাধ্যমে কর রেয়াত পেতে আগে মোট কর্মীর ১০ শতাংশ বা ১০০ জনের অধিক নিয়োগের শর্ত ছিল। এটা আরও সহজ করে ১০ শতাংশ বা ২৫ জনের বেশি করা।

এসব পদক্ষেপ তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসাকে গতিশীল করার পাশাপাশি ব্যবসায়িক সক্ষমতা বাড়াবে বলেও মনে করছে বিজিএমইএ।