ডেসটিনি-যুবকের গ্রাহকদের অর্ধেক ক্ষতিপূরণ সম্ভব: বাণিজ্যমন্ত্রী

বিতর্কিত এমএলএম কোম্পানি ডেসটিনি ও যুবকের যে পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, তা বিক্রি করে গ্রাহকদের অর্ধেক ক্ষতিপূরণ সম্ভব বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2021, 03:30 PM
Updated : 26 Sept 2021, 03:30 PM

প্রতিযোগিতা আইনের বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়ে রোববার এক কর্মশালায় তিনি একথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “বিতর্কিত এমএলএম কোম্পানি ডেসটিনি ও যুবকের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায় কিনা তা ভাবা হচ্ছে। কারণ এসব কোম্পানির সম্পদ বেড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ দুটির কোম্পানির সম্পদ বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্তদের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব হবে।

“এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। আইনে সংশোধন প্রয়োজন হলে তা করা হবে।”

মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসার মাধ্যমে ডেসটিনি গ্রুপ দেশের প্রায় ৪৫ লাখ গ্রাহকের কাছ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে সেই সময়কার গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

গ্রাহক, পরিবেশক ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সমবায় সমিতিতে বিনিয়োগ, গাছ লাগিয়ে ভবিষ্যতে তা বিক্রি করে মুনাফা দেওয়াসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে টাকা সংগ্রহ করত ডেসটিনি।

এসব টাকা দিয়ে ডেসটিনির মালিকরা নিজেদের ও প্রতিষ্ঠানের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপনা, জমি, ভবন কিনেছে। ২০১২ সালে এই কোম্পানির মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সেই থেকে ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন কারাগারে আছেন, প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমও বন্ধ।

একইভাবে যুবকও দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে সরকার প্রশাসক নিয়োগ করে। এ পর্যন্ত যুবকের গ্রাহকরাও টাকা পায়নি।

সম্প্রতি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা শপসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মানুষের থেকে আগাম টাকা নিয়ে পণ্য সরবরাহ করতে পারছে না। কয়েকটি কোম্পানির মালিক দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এ অবস্থায় ডেসটিনি ও যুবক প্রসঙ্গটি আলোচনায় এসেছে।

টিপু মুনশি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ডেসটিনি, যুবকের সম্পদের দাম বেড়েছে। এখন কীভাবে এসব সম্পদ বিক্রি করা যায়, তা নিয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এক্ষেত্রে আইনি সীমাবদ্ধতা থাকলে, তা কীভাবে দূর করা যায় সেটি তিনি (আইনমন্ত্রী) দেখবেন।

ই-কমার্স প্রসঙ্গে টিপু মুনশি বলেন, আড়াই লাখ টাকার মোটরসাইকেল দেড় বা দুই লাখ টাকায় বেচাকেনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে কিভাবে একটা পণ্য বিক্রি হতে পারে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে কথা বলতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে মন্ত্রণালয় থেকে কেনাকাটায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে কথা উঠতে পারে যে, মন্ত্রণালয় মানুষকে লাভ থেকে বঞ্চিত করছে।

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার ফোরাম (ইআরএফ) যৌথভাবে কর্মশালার আয়োজন করে।