শাক-সবজির বাড়তি দামের মধ্যে বাড়ল পেঁয়াজের দর

বন্যার কারণে মাস দুয়েকের বেশি সময় ধরে ঢাকার বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে শাক-সবজি, কাঁচা মরিচের দাম উঠেছে কেজিপ্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা; এর মধ্যে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2020, 07:01 PM
Updated : 5 Sept 2020, 07:01 PM

শনিবার ঢাকার বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে পেঁয়াজের সঙ্গে আদা, রসুন ও আলুরও বাড়তি দাম দেখা গেছে। দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগিরও। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে।

এদিন মগবাজারের চারুলতা কাঁচাবাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় কেজি ৬৫ টাকা থেকে ৬৮ টাকা দরে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি।

কারওয়ানবাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা কেজি, আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি।

গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা, আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়।                                                                                               

পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে কারওয়ানবাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেছেন, আড়ত থেকে বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে। তাই কিছুটা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে পেঁয়াজের আড়ত আমানত ভাণ্ডারের মালিক মানিক সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভারতে বন্যার কারণে সম্প্রতি ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে, সেই সাথে দামও বেড়ে গেছে। ভারতীয় পেঁয়াজের সাথে পাল্লা দিয়ে গত এক সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের বাজারও বেড়েছে।

“তবে যেহেতু গতকালকের চেয়ে আজকে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কম তাতে মনে হচ্ছে, দাম এবার কমে যাবে।”

(ফাইল ছবি)

মানিক সাহা বলেন, “দেশি পেঁয়াজ গতকাল ৫৪ টাকা ছিল, আজকে সেখান থেকে ৫ টাকা কমে ৪৮ টাকা হয়েছে। ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩৮ টাকা থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে ভারতীয় পেঁয়াজ ছিল ৩০ টাকা আর দেশি পেঁয়াজ ছিল ৪০ টাকা।” 

গত বছর এই সেপ্টেম্বরেই ভারত প্রথমে পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য বৃদ্ধি এবং পরে রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের বাজারে দেখা দেয় অস্থিরতা। কেজিপ্রতি ৫০ টাকার পেঁয়াজের দাম উঠে যায় ২৫০-৩০০ টাকায়।

পরে মিয়ানমার, চীন, মিশর ও পাকিস্তান থেকে নানা রঙের পেঁয়াজ এনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে সরকার।

আদা, রসুন ও আলুর দামও গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। আলু গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ৩৪ টাকা থেকে ৩৬ টাকা কেজি, শনিবার তা বিক্রি হয় ৩৮ থেকে ৪০ টাকায়।

দেশি রসুন গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি। শনিবার তা বিক্রি হয় ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজি। আর আমদানি করা রসুন বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি।

আমদানি করা আদার কেজি বিক্রি হয় ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। তবে দেশি আদার দাম কিছুটা কমে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শাক-সবজির দাম এখনও চড়া, শুধু কাঁচা পেঁপে ছাড়া প্রায় সব সবজির কেজি ৫০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। কাঁচা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। ঝিঙ্গা, ধুন্দল, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজি।

টমেটোর কেজি ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা। গাজর আমদানি করাটা ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকা কেজি। লাউ প্রতিটি ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা। গোল বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। আর লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি।

দাম বৃদ্ধির ধারায় রয়েছে ব্রয়লার মুরগিও। গত সপ্তাহে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও শনিবার তার দাম উঠেছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। পাকিস্তানি কক মুরগি ২৩০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা এবং লেয়ার মুরগি ২৩০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা যায়।

তবে এদিন গরুর মাংসের কেজি ৫২০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়, যা ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা ছিল।

খাসির মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হয়, যা আগে ছিল ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা।