বাজেট আশাব্যঞ্জক, বলছে ডিসিসিআই

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে আসছে অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে আশাব্যঞ্জক হিসেবে দেখছে ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 June 2020, 08:53 PM
Updated : 11 June 2020, 08:54 PM

বৃহস্পতিবার বাজেট ঘোষণার পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সংগঠনটি।

এতে বলা হয়,“বিশ্ব অর্থনীতি যখন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিপর্যস্ত, ঠিক এই কঠিন সময়ে আজকের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়ে ঘোষিত জাতীয় বাজেট ২০২০-২১ এ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৮.২% ও মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৫.৪% নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময়ে এরূপ প্রোগ্রেসিভ ও উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ঘোষিত বাজেট আশাব্যঞ্জক।”

বাজেটের কাঠামো

বাজেটের কাঠামো নিয়ে আলোচনায় সংগঠনটি বলছে, নতুন করে করবোঝা আরোপ না করে রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে।

“অতিরিক্ত রাজস্ব আহরণের জন্য করের আওতায় বাড়ানো, অনাদায়ী কর আদায় ও মফস্বল শহরে রাজস্ব আদায় বাড়াতে রাজস্ব বোর্ডের মাঠপর্যায়ে জনবল বাড়ানো প্রয়োজন। বেসরকারি বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত রাখতে বিদ্যমান করদাতাদের উপর নতুন করে করবোঝা আরোপ না করে রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে।”

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের আয়তন ৫ লক্ষ ৬৮ হাজার কোটি টাকা যা বিগত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১৩.২৪% বেশি। মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা যা বিগত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৯.৮২% বেশি।

ডিসিসিআই বলছে, “এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং বিদ্যুৎ বিভাগে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষিতে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিবেচনায় স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ আরও বৃদ্ধি করা উচিত।”

ব্যক্তি শ্রেণির আয়করের ন্যূনতম সীমা ৩ লক্ষ টাকা করায় সাধুবাদ জানিয়েছে ডিসিসিআই।

“করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো এবং সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করার কারণে করদাতাদের উপর করবোঝা কিছুটা হলেও লাঘব হবে বলে আশা করি।”

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব পরবর্তী সময়ে ব্যবসায়ীরা যাতে টিকে থাকতে পারে সেজন্য কর্পোরেট করের হার আরও কমানোর অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।

ভ্যাট রিটার্ন পদ্ধতি সম্পূর্ণ অনলাইন করা, রিফান্ড পদ্ধতি সহজীকরণ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইনের ধারা অনুযায়ী ভ্যাট, শুল্ক ও অগ্রীম কর ২ মাসের মধ্যে রিফান্ড করার প্রস্তাব করা হয়েছে ডিসিসিআইর পক্ষ থেকে।

রপ্তানিমুখী ও স্থানীয় শিল্প

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সরকার  শিল্প ও সেবা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের পরিমাণ বৃদ্ধিসহ  রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিকদের বেতন ভাতার জন্য শহজ শর্তে ঋণ প্রদানসহ যেসব আর্থিক ও নীতিগত সহায়তা প্রদান করেছে, তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

“পাশাপাশি, রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প, চামড়া, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাতপণ্য এবং ঔষধ পণ্যসমূহের কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম আয়কর অব্যাহতি ও অগ্রিম কর প্রত্যাহারের আবেদন জানাচ্ছি।”

কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই)

এতে বলা হয়, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বেতন প্রদানের জন্য ২ শতাংশ সুদে শহজ শর্তে ঋণ এবং স্থানীয় পর্যায়ে লোকাল এলসির মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে উৎসে কর ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে  ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে ডিসিসিআই ।

আর্থিক খাত নিয়ে আর্থিক খাত পরামর্শক কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করছি ডিসিসিআই, যেটা করোনা দুর্যোগের সময়ে আর্থিক খাত সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য দিকনির্দেশনা প্রদান করবে।