পোশাক কারখানাও ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার আহ্বান বিজিএমইএর

নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার চলমান লকডাউন পরিস্থিতি ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানোর পর পোশাক কারখানাগুলোও সে পর্যন্ত বন্ধ রাখতে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিজিএমইএ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 April 2020, 04:18 PM
Updated : 6 April 2020, 04:18 PM

সোমবার বিজিএমইএর সচিব আব্দুর রাজ্জাক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সদস্যভুক্ত পোশাক কারখানাগুলোকে আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার বিষয়ে আহ্বান অব্যাহত রয়েছে। একই সাথে বিজিএমইএর সব সদস্য প্রতিষ্ঠানকে যত দ্রুত সম্ভব শ্রমিক ভাই-বোনদেন মার্চ মাসের মজুরি দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে সদস্যদের সহায়তার জন্য বিজিএমইএতে একটি সেল খোলা হয়েছে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে প্রথম দফায় ৪ এপ্রিল, পরে ১১ এপ্রিল এবং তৃতীয় দফায় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণের ঘোষনা দেয় সরকার। সব সরকারি-বেসরকারি অফিস, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় ছুটি না হওয়ায় এ নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছে।

কারখানা ছুটি দেওয়ার বিষয়ে ‘কিছুই করার নেই’ বলে প্রথম দিকে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলে এলেও পরবর্তীতে সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছেন তিনি। প্রথম ধাপে কারখানা বন্ধে মালিকদের প্রতি ‘পরামর্শ’ দেন বিজিএমইএ সভাপতি, পরের ধাপে সবাইকে কারখানা বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে বার্তা পাঠান। সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসাবে, লকডাউন চলাকালীন ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়ে দাপ্তরিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল বিজিএমইএ।

এদিকে মহামারী পরিস্থিতির মধ্যেও কিছু কিছু পোশাক কারখানায় ছুটি না দিয়ে শ্রমিকদের ‘জোর করে’ কাজ করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে বেশ কিছু দিন ধরে।

বিজিএমইএর অনুরোধের পর গত রোববারও সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুরের কাশিমপুর, টঙ্গী, ময়মনসিংহের ভালুকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পোশাক কারখানা চালু রাখা হয়েছিল বলে জানা গেছে। কারখানা চালু রাখার বিরুদ্ধে সরকারেরও জোরালো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।

শ্রমিক সংগঠন গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সোমবারও সাভার- আশুলিয়া এলাকায় বেশি কিছু পোশাক কারখানা চালু ছিল।এসব কারখানায় শ্রমিকদের বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে কাজে নেওয়া হচ্ছে।

“আশুলিয়ার জামগড়ায় সোমবারও শারমিন গ্রুপের কারখানা, উইন্ডি গ্রুপ ও দাদা অ্যাপারেলের কারখানায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ শ্রমিক নিয়ে কাজ হয়েছে। আরও শ্রমিকদের কারখানায় আসার জন্য চাপ দিচ্ছে তারা,” বলেন বাবু।

গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি জলি তালুকদার বলেন, “গাজীপুরে সিএন নিটওয়্যার নামের একটি কারখানা গতকালকেও খোলা ছিল। গাজীপুরের হোসেন মার্কেট এলাকায় বিআইএস অ্যাপারেলস সোমবারও কারখানা খুলেছিল। কিন্তু শ্রমিকরা এসে বিক্ষোভ প্রতিবাদ করে কারখানা বন্ধ করে দেয়। বোর্ড বাজার এলাকায় ঝর্না নিটওয়্যার এখনও তাদের কারখানা চালিয়ে যাচ্ছে। উত্তরা এলাকায় দি রোজ গার্মেন্টসটি চালু আছে। গাজীপুরের কাশিমপুর এলাকায় ডেনিশ নিটওয়্যারটি, তাসমিনা গার্মেন্টস চালু রয়েছে।”

তাদের অভিযোগের বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কারখানা মালিকদের বক্তব্য জানতে পারেনি।