দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে সম্ভাবনা দেখছে হাতিল

ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে আসবাবপত্র বিপণনের নতুন লক্ষ্য ঠিক করেছে দেশের অর্ধ শতাব্দিকালের পুরোনো ফার্নিচার ব্র্যান্ড হাতিল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2020, 12:17 PM
Updated : 11 Jan 2020, 12:18 PM

গত দুই বছরে ভারত, নেপাল ও ভুটানের বিভিন্ন শহরে ২১টি বিক্রয় কেন্দ্র চালুর পর আগামী তিন বছরে আরও ১৪০টি চালুর নতুন লক্ষ্যমাত্রার কথা জানিয়েছেন হাতিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম এইচ রহমান। 

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৫তম আসরে হাতিলের প্যাভিলিয়নে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে ব্যবসার বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ ফার্নিচার ইন্ডাস্ট্রিজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সেলিম বলেন, দেশের প্রাচীনতম ফার্নিচার ব্র্যান্ড হাতিল তার নিজস্ব নামেই বিশ্ব বাজারে অবস্থান তৈরি করতে চায়; ইতোমধ্যে সে ধরনের উৎপাদন সক্ষমতা ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে তার কোম্পানি। এক্ষেত্রে ভারত, নেপাল, ভুটানসহ দক্ষিণ এশিয়ার বাজারগুলোতে সমীক্ষা করা হয়েছে। এ অঞ্চলে নিজেদের পণ্যের আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।

সাভারে ২৫ একর জমি নিয়ে গড়ে উঠেছে হাতিলের কারখানা। বিদেশ থেকে আমদানি করা উডেন কাঠ, ইস্পাত, ফোম-ফেব্রিক্সের সমন্বয়ে চেয়ার, টেবিল, কিচেন রুম ডেকোরেশন, লিভিং রুম সেট, অফিস ডেকোরেশন, আলমিরা, বুক সেলফ, ওয়্যারড্রোভ, ড্রেসিং টেবিলসহ গৃহসজ্জার অন্যান্য তৈজসপত্র তৈরি করে হাতিল।

শ্রমিক ও ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে প্রায় তিন হাজার জনবলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় প্রতিদিন ৪০ হাজার থেকে ৪৫ হাজারটি চেয়ার/টেবিল বা অন্যান্য সামগ্রী তৈরির সক্ষমতা রয়েছে বলে জানান সেলিম।

গত ১০ বছরে দেশে ফার্নিচারের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড আত্মপ্রকাশ করেছে। তবে বার্ষিক প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার বাজারে অপ্রাতিষ্ঠানিক ফার্নিচার খাতের প্রভাব এখনও বেশি।

সেলিম রহমান জানান, সর্বশেষ বছরে হাতিলের বার্ষিক বিপণন ছিল ৩২৩ কোটি টাকা। যেখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিপণন ছিল প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। সেই হিসাবে হাতিল রয়েছে বাজারের নেতৃত্বের স্থানে। বিদেশ থেকে কাঠসহ বিভিন্ন কাঁচামাল আমদানি করা হলেও শ্রমনির্ভর এই পণ্য তৈরিতে অন্তত ৫০ শতাংশ মূল্য সংযোজন রয়েছে।

দেশের বিভিন্ন শহরে হাতিলের রয়েছে ৭০টি বিপণন কেন্দ্র। এর বাইরে পশ্চিম বঙ্গ, কাশ্মির, হায়দারাবাদ, ব্যঙ্গালুরু, কাঠমান্ডু, থিম্পুসহ এসব দেশে রয়েছে ২১টি বিপণন কেন্দ্র।

দেশের বাইরে ব্যবসা বাড়ানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে সেলিম বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র, কানাডায় বিক্রয় কেন্দ্র খুলে রপ্তানির অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা গেছে ফার্নিচারের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে, এই অঞ্চলের বাজারে ভালো ডিজানের ফার্নিচারের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। স্থানীয় এজেন্টদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইতোমধ্যেই যে ২১টি বিপণন কেন্দ্র চালু করা হয়েছে সেখানকার বিপণন ব্যবস্থা আমাদের আশা দেখাচ্ছে।

মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় শনিবার হাতিলের স্টলে দর্শনার্থীর ভিড়। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

“আগামী ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে সেভেন সিস্টার, দক্ষিণ ভারত, নেপাল, ভুটানসহ এই অঞ্চলে ১৪০টি বিপণন কেন্দ্র চালু করা যাবে বলে আমাদের মনে হচ্ছে,” বলেন তিনি।

দেশের বাজারে হাতিলের পণ্যগুলোতে এক বছরের বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়া হচ্ছে। পাঁচ বছরের মধ্যে ঘুনে ধরলে তা পরিবর্তন করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও রয়েছে। ফার্নিচারের কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে কেবল সেই অংশটুকু কিনে এনে পরিবর্তনের নতুন একটি সুযোগ চলতি বছরেই চালু হবে বলে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানান হয়েছে।