দুই-এক বছরে পূর্বাচলে যাচ্ছে না বাণিজ্য মেলা

শেরেবাংলা নগর থেকে বাণিজ্য মেলা পূর্বাচলে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা হলেও দুই-এক বছরে তা হচ্ছে না বলে জানিয়ে দিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2019, 12:54 PM
Updated : 31 Dec 2019, 12:57 PM

তিনি বলেছেন, “আমি মনে করি না যে দুয়েক বছরের মধ্যে বা সহসা পূর্বাচলে মেলা আয়োজন করা যাবে। সেখানে অবকাঠামে প্রায় প্রস্তুত হলেও এত বড় একটা মেলা আয়োজন করার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি, জনসমাগম বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়নি।”

এবারের বাণিজ্য মেলা আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরতে মঙ্গলবার শেরে বাংলা নগরে বাণিজ্য মেলার অস্থায়ী সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) আয়োজনে ১৯৯৫ সাল থেকে শেরেবাংলা নগরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। এই কারণে স্থানটি মেলা মাঠ নামেও পরিচিতি পেয়েছে।

এই মেলাকে কেন্দ্র করে মাসজুড়ে যানজট লেগে থাকে শেরেবাংলা নগর, আগারগাঁও, শ্যামলীসহ আশপাশের সড়কগুলোতে।

গত কয়েক বছর ধরেই বলা হচ্ছে, শেরেবাংলা নগর থেকে মেলা পূর্বাচলে সরিয়ে নেওয়া হবে।

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ২০১৯ সাল থেকেই বাণিজ্য মেলা পূর্বাচলে স্থায়ীভাবে নির্মিত সরকারি প্রদর্শনী কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে বর্তমান বাণিজ্যমন্ত্রী সেই সম্ভাবনা নাকচ করেছেন।

২০২০ সালের মে মাস থেকে পূর্বাচলের প্রদর্শনী কেন্দ্র প্রস্তুত হবে জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, সেখানে পণ্যভিত্তিক বিশেষায়িত প্রদর্শনীর আয়োজন করা যেতে পারে। যেমন পোশাক পণ্যের মেলা, পাদুকা ও নির্মাণ সামগ্রীসহ অন্যান্য পণ্যের প্রদর্শনী।

২৪ বছর ধরে আয়োজিত হয়ে আসছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ফাইল ছবি)

এবারের বাণিজ্য মেলার ২৫তম আসর উদ্বোধন হবে বুধবার সকালে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এবারের আয়োজনের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রতিবছর মেলায় অনেক বেশি দোকান থাকায় এক ধরনের গিঞ্জি পরিবেশে সৃষ্টি হয়। দর্শনার্থীদের জন্য স্বাচ্ছন্দপূর্ণ পরিবেশ তৈরি এবং মেলার বাহ্যিক সৌন্দর্য বাড়াতে এবার মেলায় স্টলের সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। পাশাপাশি দেশে উৎপাদিত পণ্যগুলো যাতে সঠিকভাবে নিজেদের পণ্যের প্রচার ঘটাতে পারে, সেজন্য তাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।”

আগের বছর মেলায় মোট স্টল-প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ছিল ৬৩০টি। এবার সেটা কমিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে ৪৮৩টিতে। ফলে সবুজ উদ্যান, বিশ্রামাগার, শিশুদের জন্য বিনোদনের স্থানের পরিসর বেড়েছে।

ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, প্রতি বছর মেলায় দেখা যায় বিদেশি পণ্যগুলো বাংলাদেশি পণ্য বলে দেশীয় স্টলে বিক্রি করা হচ্ছে। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতেই তারা স্টল সংখ্যা কমিয়ে এনেছেন। দেশীয় পণ্যগুলো যাতে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এবার যত্রতত্র বিদেশি পণ্য দেখা যাবে না।

স্টল কমিয়ে আনায় আয় কমায় অর্থ সমন্বয় করতে এবার টিকেটের দাম ১০ টাকা বাড়ানো হয়েছে বলে ইপিবি কর্মকর্তারা জানান।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মেলা দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। টিকেটের মূল্য প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং ১২ বছরের নিচের জন্য ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গাড়ি রাখার স্থানসহ এবার মেলা প্রাঙ্গণের আয়তন দাঁড়িয়েছে ৩২ একর।

বাণিজ্য সচিব জাফর উদ্দিন বলেন, “এবার মেলার আয়োজনে যে নতুনত্ব দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে তা অবশ্যই দর্শনার্থীদের চোখে দৃশ্যমাণ হবে। এছাড়া প্রতিবছর খাবারের অতিরিক্ত মূল্য নিয়ে দর্শনার্থীদের যে অভিযোগ শোনা যায়, এবার সেদিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হবে।”