পেঁয়াজের দাম এমনিতেই কমবে, আশা বাণিজ্যমন্ত্রী

বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হলেও তা কমে আসবে বলে আশা করছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 July 2019, 11:30 AM
Updated : 16 July 2019, 11:30 AM

তিনি বলেছেন, “আমরা দেখতে চাচ্ছি, দামটা কমে আসে কি না। আমরা আশাবাদী কমে আসবে।”

দাম না কমলে বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে এক সাংবাদ সম্মেলনে এলে পেঁয়াজের দাম নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন বাণিজ্যমন্ত্রী।

ঢাকার বাজারে মাসখানেকের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, আমদানি না বাড়লে কোরবানির ঈদের আগে দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

গত শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক পাল্লা (৫ কেজি) পেঁয়াজ বিক্রি হয় ২০০ টাকায়, যা তিন দিন আগেও ছিল ১৭৫ টাকা থেকে ১৮০ টাকা। খুচরায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।

কোরবানির ঈদের আগে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নজরে এসেছে বলে জানান টিপু মুনশি।

ভারত থেকে আমদানি কিছুটা কমে যাওয়া এবং বৃষ্টিকে এর কারণ হিসেবে দেখান তিনি। পাশাপাশি অসাধু ব্যবসায়ীরাও দাম বাড়াচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “যে দুটি পয়েন্টে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসে, সেটা প্রতিদিন যেভাবে আসত, তার থেকে কমে আসছে। আরেকটি খবর নিতে বলেছি, ভারত যে ১০ শতাংশ ইনটেনসিভ দিত পেঁয়াজ রপ্তানিতে, সেটা নাকি তারা উইথড্রো করেছে। তাছাড়া দুষ্ট ব্যবসায়ীরা তারা সব সময় সুযোগ খোঁজে।”

তবে পেঁয়াজের মূল্যে নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “গতকাল টিসিবির সাথে কথা বলেছি। বাজার মনিটর করব, যদি প্রয়োজন হয় টিবিসির মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রির ব্যবস্থা করব।”

দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ে চিন্তিত কি না- সাংবাদিকদের প্রশ্নে টিপু মুনশি বলেন, “সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই দেখি দাম বাড়লো কিনা জিনিসের। এটা রাতের দুঃস্বপ্নের মতো, খোঁজখবর নেই কী বাড়ে না বাড়ে।”

রপ্তানিতে সুখবর

সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বিপরীতে আয় হয়েছে ৪ হাজার ৬৩৭ কোটি ডলার।

২০১৭-১৮ সালে মোট রপ্তানি (পণ্য ও সেবাখাত) আয়ের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার। পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার ১৩ দশমিক শূন্য ছয় এবং লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি।

২০২১ সালের মধ্যে রপ্তানি আয় ৬ হাজার ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করতে পারব বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।”

রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনার উদ্যোগের কথাও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মফিজুল ইসলাম বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের দেশভিত্তিক বিশ্লেষণে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

“যুক্তরাষ্ট্রে এ যাবৎকালে সর্বোচ্চ রপ্তানি হয়েছে ৬ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার, যা বিগত বছরের তুলনায় ১৪ দশমিক ৯২ শতাংশ বেশি। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নে ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হয়েছে এবং প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ।”

বাণিজ্য সচিব বলেন, এশিয়ার দেশগুলোতে রপ্তানি বাড়ছে। জাপানে ১৩৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে এবং এতে প্রবৃদ্ধির হার ২০ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির হার কমলেও এ খাতে মোট রপ্তানির পরিমাণ ১০২ কোটি ডলার বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সচিব জানান, গত অর্থবছরে প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৪১৩ কোটি ডলার, যা দেশের মোট রপ্তানির ৮৪ দশমিক ১৮ শতাংশ।