শুক্রবার ঢাকার একাধিক কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম ১১৫ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন। আর এক হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে ৪২ টাকায়।
এক সপ্তাহ আগে ডিমের ডজন বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকার মধ্যে।
শান্তিনগর বাজারের ডিম বিক্রেতার মো. সুমন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাজারে ডিমের সরবরাহ কম, কিন্তু চাহিদা কমেনি। যে কারণে ঈদের পর কয়েক দফায় ডিমের দাম বেড়েছে। চলতি সপ্তাহেই ডজনপ্রতি ডিমের দাম ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে গোল আলুর দাম কেজিতে দুই টাকা থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে আলুর দাম ছিল কেজিপ্রতি ১৮ থেকে ২০ টাকা। শুক্রবার আলু বিক্রি হচ্ছিল ২২ থেকে ২৫ টাকায়।
মালিবাগ কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী মো. মোস্তফা বলেন, হঠাৎ করে আলু দাম বেড়ে গেছে। বড় বড় ব্যবসায়ীদের মজুদের পরিমাণ কমে আসায় দাম বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি।
একই বাজারের আরেক ব্যবসায়ী খাইরুল ইসলাম বলেন, “আলু কোল্ড স্টোরেজে রাখতে হয়, বেশি দিন আলু স্টোরেজে রাখার ফলে খরচ বেড়ে যাওয়ায় আলুর দাম বেড়েছে।”
এদিকে বাজারে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে অন্তত তিন টাকা কমেছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
কারওয়ানবাজারে এক পাল্লা (পাঁচ কেজি) পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা ১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে এক পাল্লা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা থেকে ১৫৫ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাঁচ কেজিতে পেঁয়াজের দাম পাইকারি পর্যায়ে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
খুচরা বাজারে গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, শুক্রবার ওই পেঁয়াজ ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর অধিকাংশ কাঁচাবাজারে সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ঢেঁড়সের কেজি গত সপ্তাহের মত ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রায় একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঝিঙ্গা, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, করল্লা ও কাকরোল। আর পটল বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা কেজি।
বেগুন ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা, কচুর লতি ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর বরবটির ও গাজর ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে আগের মত দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ। এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা। আর প্রতি কেজি ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
শান্তিনগর বাজারের সবজি বিক্রেতা আবদুর রহমান বলেন, “ঈদের পর সবজির দামে তেমন কোনো পরিবর্তন নেই। দুই/একটা সবজির দাম কখনও বেড়েছে, আবার কমেছে। বেশ কিছু দিন ধরে অধিকাংশ সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে।”
এই বাজারে ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে সবজি ভরপুর আছে। যে কারণে দাম মাঝারি পর্যায়ে আছে। সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আর যেন না বাড়ে।
বাজার যাতে কোনো ধরণের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে না চলে, সে ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত নজরদারির আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে অন্যান্য জিনিসপত্রের মত মাংসের বাজারেও দাম অপরিবর্তিত আছে।
বাজার ভেদে ব্রয়লার মুরগি ১৩৫ টাকা থেকে ১৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর গরুর মাংস ৫২৫ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
কয়েক মাস ধরে মাছের বাজার এখনও চড়া। রুই মাছ ২৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, পাবদা, চিতল ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা এবং শিং মাছ ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
তবে বাজারে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছ। তেলাপিয়া আগের মতই ১৬০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা ও পাঙাশ ১৫০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।