আইসিটি প্রশিক্ষণ-বিনিয়োগে এক সঙ্গে কাজ করবে হাইটেক পার্ক-ফুজিৎসু

তথ্য প্রযুক্তি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার পাশাপাশি বাংলাদেশের আইসিটি সেবা ও পণ্য বিশ্ব বাজারে সম্প্রসারণে বিনিয়োগের লক্ষ্যে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে জাপানের ফুজিৎসু রিসার্চ ইনস্টিটিউট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2019, 03:02 PM
Updated : 17 June 2019, 03:02 PM

সোমবার ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে চুক্তি স্বাক্ষর করেন ফুজিৎসু রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সভাপতি শিনজো কাগাওয়া ও হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম।

হোসনে আরা বেগম বলেন, “চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় বাংলাদেশের মানব সম্পদকে উচ্চতর প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে ফুজিৎসু রিসার্চ  ইনস্টিটিউট বিভিন্ন প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে।”

এসব প্রশিক্ষণের কোর্স কারিকুলামের মধ্যে থাকবে বিগ ডেটা, ডেটা সায়েন্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, আইওটি, রোবোটিক্স, ব্লক চেইন, সাইবার সিকিউরিটি বলে জানান তিনি।

এসব প্রশিক্ষণ দেশের আইটি সেক্টরে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখবে উল্লেখ করে হাইটেক পার্কের এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, “এই দক্ষ মানবসম্পদ বাংলাদেশ ছাড়াও জাপান ও অন্যান্য দেশের ক্রমবর্ধমান আইটি ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে।  এতে কর্মীদের দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের দুয়ার উন্মোচিত হবে।”

এই চুক্তি স্বাক্ষরের পর বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে উচ্চপ্রযুক্তি বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করছে হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।

এ বছর জাপানে অনুষ্ঠিত ‘আইটি উইকে’ অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি আইটি প্রতিষ্ঠান। সেখানেই হাইটেক পার্কের একটি প্রতিনিধি দল ফুজিৎসুর রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

সেই ধারাবাহিকতায় ফুজিৎসু বাংলাদেশের হাইটেক পার্কের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী হয় বলে জানান হোসনে আরা বেগম।

চুক্তি প্রসঙ্গে ফুজিৎসুর পরিচালক শিনজো কাগাওয়া বলেন, “ফুজিৎসু বাংলাদেশের ২৮টি হাইটেক পার্কে বিদেশি বিশেষ করে জাপানি বিনিয়োগ বাড়াতে কাজ করবে।”

ফুজিৎসু গ্রুপ জাপান ও বাংলাদেশের ‘আইটি বিজনেস হাব হতে যাচ্ছে’  উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল খাতের মধ্যে  আইটি সেক্টর একটি, এতে কোনো সন্দেহ নাই।

“অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আমরা এই ডাইমানিক ও ইনোভেটিভ সেক্টরে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছি। অ্যাডভান্স টেকনোলজিকে কেন্দ্র করে হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্টের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা আমরা দেব। “

কাগাওয়ার ‘বিশ্বাস’, ফুজিৎসুর কর্মশালা বাংলাদেশে ‘হাই স্কিল’ আইটি প্রকৌশলী তৈরি করবে।

“পাশাপাশি আইটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার, কানেকটিভিটি,  ডিজিটাল সার্ভিস কেন্দ্র করে বিনিয়োগেও  অগ্রগতি আসবে বলে ধারণা করছি”, বলেন শিনজো।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “বাংলাদেশের হাইটেক পার্কগুলোতে যারা বিনিয়োগ করতে চান, এ চুক্তি তাদের জন্য একটা গেটওয়ে হিসেবে কাজ করবে।

“জাপানের রয়েছে দারুণ সব প্রযুক্তি; আর আমাদের রয়েছে তরুণ মানবসম্পদ। এই দুই মিলে কাজ করলে আমরা আমাদের সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারি। “

অনুষ্ঠানে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি বলেন, “এ চুক্তির ফলে জাপানের আইটি কোম্পানি এখন বাংলাদেশের বাজারে বিনিয়োগ করতে আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে।”

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো.নজিবুর রহমান,  প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর ‘বাংলাদেশ-জাপান ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিস ইন আইসিটি সেক্টর’ শীর্ষক ডায়ালগে অংশ নেন জেট্রোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি দায়সুকা আরাই, হাইটেক পার্কের পরিচালক ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম এবং বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম।