পোশাক ব্যবসায়ীদের সংগঠনটির প্রথম নারী সভাপতি হতে চলেছেন মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা।
আগামী ৬ এপ্রিল বিজিএমইএর নির্বাচন হবে।ওই নির্বাচন সামনে রেখে শনিবার সম্মিলিত পরিষদ এবং ফোরাম সমঝোতার মাধ্যমে যে প্যানেল জমা দিয়েছে তাতে দলনেতা করা হয়েছে ঢাকা উত্তরের প্রয়াত মেয়র বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হককে।
এতে নিশ্চিত করে বলা যায় যে, বিজিএমইএতে আগামী দুই বছর নেতৃত্ব দেবেন রুবানা হক।
ফোরাম নেতা বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ শনিবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগের ধারাবাহিকতায় এবারও আমরা সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম সমঝোতার প্যানেল দিয়েছি। তাতে রুবানা হক হচ্ছেন প্যানেল লিডার।
“আর যদি কোনো প্যানেল বা অন্য কেউ স্বতন্ত্রভাবেও নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে নির্বাচন হলেও সম্মিলিত পরিষদ-ফোরাম প্যানেল জয়ী হবে, তাতেও কোনো সন্দেহ নেই। সেক্ষেত্রেও নতুন সভাপতি হবেন রুবানা হক।”
রুবানা হকও একই কথা বলেছেন। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শনিবার আমরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। তাতে ফোরাম-সমিলিত পরিষদ সমঝোতার মাধ্যমে একটি প্যানেল জমা দিয়েছি। তাতে আমাকে প্যানেল লিডার করা হয়েছে।”
তার মানে আপনি বিজিএমইএর নতুন সভাপতি হচ্ছেন এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ…দোয়া করবেন।”
বিজিএমইএ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এর নির্বাচনে সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছে। কিন্তু গত কয়েকটি নির্বাচনে সমঝোতার মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত হচ্ছে।
গতবারও সমঝোতার মাধ্যমে সিদ্দিকুর রহমান নেতৃত্বাধীন কমিটি নির্বাচিত হয়েছিল; নির্বাচনের প্রয়োজন হয়নি।
“গার্মেন্ট মালিকদের প্রায় সবাই ফোরাম অথবা সম্মিলিত পরিষদের সমর্থক। তাই যদি নির্বাচনও হয় তাতেও শতভাগ নিশ্চিত যে, এই সমঝোতার প্যানেলই জয়ী হবে।”
শনিবার কারওয়ানবাজারে বিজিএমইএ কার্যালয়ে রুবানা হকের নেতৃত্বে সম্মিলিত পরিষদ-ফোরাম প্যানেলের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি টিপু মুনশিসহ বিভিন্ন সময়ে বিজিএমইএর সভাপতির দায়িত্ব পালন করা বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
টিপু মুনশি সম্মিলিত পরিষদের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। এই পরিষদ থেকেই তিনি বিজিএমইএর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এছাড়া মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বিজিএমইএর আরেক সাবেক সভাপতি এফবিসিসিআই সভাপতি সম্মিলিত পরিষদ নেতা শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এবং বিজিএমইএর বর্তমান সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে ফোরামের নেতাদের মধ্যে রুবানা হক ছাড়াও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান সিনহা, আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচন বোর্ডের সদস্য ও মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবিরও উপস্থিত ছিলেন।
পরিচালনা পর্ষদের ৩৫টি পদের জন্য ২০১৯-২০২১ সেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বিজিএমইএর নেতা নির্বাচন পদ্ধতি অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদের ৩৫ পরিচালক নির্বাচন করেন সাধারণ সদস্যরা। পরে নির্বাচিত পরিচালকরা একজন সভাপতি এবং ৭ জন সহসভাপতি নির্বাচিত করে থাকেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, শনিবার ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। প্রত্যাহারের শেষ দিন ৬ মার্চ। ৬ এপ্রিল ৩৫ জন পরিচালক পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ফোরাম থেকে ১৯ এবং সম্মিলিত পরিষদ থেকে ১৬ জন দিয়ে সম্মিলিত পরিষদ-ফোরামের সমঝোতার প্যানেল করা হয়েছে।
২০১৫ সালে সংগঠনটির দায়িত্বে আসা সিদ্দিকুর রহমান নেতৃত্বাধীন পর্ষদের মেয়াদ কয়েক ধাপে বাড়িয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে বিজিএমইএর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত বছরের জানুয়ারিতে স্বাধীনতা পরিষদ নামে একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে এই পরিষদ শনিবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঢাকা থেকে তাদের ২২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বেশ কিছু বাধা আসলেও শেষ পর্যন্ত তাদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা নিশ্চিত করেছেন।
এবারের বিজিএমইএর নেতৃত্ব নির্বাচনে মোট ভোটার হচ্ছে ১ হাজার ৯৫৫ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ১ হাজার ৫৯৭ জন। বাকি ৩৫৮ জন চট্টগ্রামের।