পেট্রোল পাম্পে পরিমাপে ‘ফাঁকি’ পেয়েছে বিএসটিআই

রাজধানীতে আকস্মিকভাবে চারটি ফিলিং স্টেশনে অভিযান চালিয়ে পরিমাপে ফারাক পেয়েছে রাষ্ট্রীয় মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিএসটিআই।

ফয়সাল আতিকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2019, 01:26 PM
Updated : 11 Feb 2019, 01:57 PM

একটি ফিলিং স্টেশনে প্রতি ১০ লিটার অকটেনে সর্বোচ্চ ৩০০ মিলিলিটার কম দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। অপর একটি স্টেশনে প্রতি ১০ লিটার অকটেনে ১৬০ মিলিলিটার বেশি পেয়েছে সংস্থাটি।

সোমবার বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর বিজয় সরণিতে অবস্থিত ট্রাস্ট ফিলিং অ্যান্ড এসকেএস সিএনজি স্টেশনে অভিযান শুরু করে বিএসটিআই।

এই স্টেশনে প্রতি ১০ লিটার অকটেনে সর্বনিম্ন ৫০ মিলিলিটার থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ মিলিলিটার পর্যন্ত কম দেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে তারা।

বিএসটিআইএর মেট্রোলজি বিভাগের পরিচালক আনোয়ার হোসেন মোল্লা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বাতাসে সহজে মিশ্রনপ্রবণ পেট্রোল-অকটেন প্রতি ১০ লিটারে ৩০ মিলিলিটার কম হওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু ট্রাস্ট ফিলিং স্টেশনে ৫০ থেকে ৩০০ মিলিলিটার পর্যন্ত কম পাওয়া গেছে।

“আমরা ওদের ১১টি নজেল পরীক্ষা করেছি। এর প্রত্যেকটিতে প্রতি ১০ লিটারে ৫০ মিলিলিটার থেকে ৩০০ মিলিলিটার পর্যন্ত কম পেয়েছি। কোনো কোনোটায় দেড়শ, কোথাও আড়াইশ মিলিলিটার পর্যন্ত কম পাওয়া গেছে।”

ট্রাস্ট ফিলিং স্টেশনে জ্বালানি নিতে আসা এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, “প্রতি ১০ লিটারে ৩০০ মিলি কম হওয়াটা বড় ধরনের ফাঁকি। আপনারা বিষয়টি খবরে তুলে ধরেন। কারণ ট্রাস্ট ফিলিং স্টেশনের সঠিক পরিমাপের জন্য সুনাম ছিল। তারা যদি ওজনে কম দেয় তাহলে আমরা কোথায় যাব? “

এলেনবাড়িতে অবস্থিত ট্রাস্ট ফিলিং অ্যান্ড এসকেএস সিএনজি স্টেশনের প্রকল্প পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর আবু ফাতেহ মো. বশিরুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ক্রেতাদের সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়ে ব্যবসা করার চেষ্টা করছি। এই প্রতিষ্ঠানের অধিক লাভের প্রয়োজনীয়তা নেই।”

বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় গ্রাহক তেল কম পাওয়ার বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে চাননি এই কর্মকর্তা।

“পেট্রোল ও অকটেনের বাতাসে মিশে যাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকার কারণে এর হিসাব হেরফের হয়। বিএসটিআই তার নিজস্ব পদ্ধতি অবলম্বন করে কাজ করে। তাই তাদের কাজ নিয়ে মন্তব্য করতে চাইনা,” বলেন তিনি।

বিএসটিআইয়ের মেট্রোলজি বিভাগের ঢাকা বিভাগীয় পরিদর্শক রেজাউল হক জানান, এদিন কল্যাণপুরে সোহরাব ফিলিং স্টেশনে চারটি ইউনিট, খালেক ফিলিং স্টেশনের পাঁচটি ইউনিট পরীক্ষা করে গ্রহণযোগ্য মাত্রায় তেল সরবরাহ করার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

সাত রাস্তায় সিটি ফিলিং স্টেশনে তিনটি ইউনিট পরীক্ষা করে দুটিতে গ্রহণযোগ্য মাত্রায় সরবরাহের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে এই ফিলিং স্টেশনের একটি ইউনিটে প্রতি ১০ লিটারে ১৬০ মিলিলিটার বেশি সরবরাহের প্রমাণ পাওয়া যায়। বেশি জ্বালানি সরবরাহের সর্বোচ্চ মাত্রা ১০ লিটারে ৬০ মিলিলিটার।

এই কর্মকর্তা বলেন, “তেলের পরিমাপে কম দেওয়া এবং বেশি দেওয়া দুটোই অপরাধ। এই অপরাধের দায়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করবে বিএসটিআই।”