সমালোচকরাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কঠোর করতে বলবে : জব্বার

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সমালোচনায়মুখরাই একদিন আইনটির পক্ষে অবস্থান নিয়ে আরো কঠোর করতে দাবি জানাবে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2018, 05:48 PM
Updated : 6 Oct 2018, 05:48 PM

শনিবার দুপুরে টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) আয়োজিত ‘ডিসকাশন অন প্রাইভেসি অ্যান্ড ডেটা সিকিউরিটি’ শিরোনামে এক গোলটেবিল আলোচনায় এসে তিনি একথা বলেন।

সংসদে পাস হওয়া আইনের ৩২ ধারায় ওই ধারায় বলা আছে, যদি কোনো ব্যক্তি ‘অফিশিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট-১৯২৩ এর আওতাভুক্ত কোনো অপরাধ কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ডিজিটাল মাধ্যমে সংঘটন করে বা করতে সহায়তা করেন, তা হলে তিনি সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা ২৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

সংসদে উত্থাপিত বিলে এই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধের জন্য বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেপ্তারে পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশ সর্বোচ্চ ৭ বছরের জেল, ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এই আইন প্রণয়নের কারণে প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ হবে বলে মনে করছেন সাংবাদিকরা। সংসদীয় কমিটিতেও বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সংশোধনীর দাবিও জানিয়েছিল সম্পাদক পরিষদ।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে কর্ণপাত করেননি। উল্টো সম্পাদক পরিষদের সমালোচনা করেছেন তিনি।

সেই ধারাবাহিকতাতেই শনিবার দুপুরের সভায় মোস্তাফা জব্বার বলেন, আজকে যারা আইনটির সমালোচনা করছেন। তারাই আইনটি কঠোর করার দাবি জানিয়ে বলবেন- এত দুর্বল করে আইন তৈরি করে করেছে কেন?

“আজকে বলা হচ্ছে, ঘুষ খাচ্ছে.. ছবি তুলে আমরা কি ছাপাতে পারব না?  বলা হচ্ছে, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নষ্ট হয়ে যাবে। আমাকে কিন্তু ভাবতে হচ্ছে, আমার ডেটা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে তার নিরাপত্তা নিয়ে। সরকার যদি এর নিরাপত্তা দিতে না পারে তাহলে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার কি হবে?”

সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করতে গেলে সম্প্রচার কমিশনের অনুমতি নিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “ আশঙ্কা বা ভয়ের কোনো কারণ নেই।”

জব্বার বলেন, “আগামীর পৃথিবী হবে আর্টিফিশিয়াল ইনটিলিজেন্সে, আইওটিতে, বিগ ডেটা অ্যানালাইসিসের। এসব খাতে যেমন পরিস্থিতি আসছে, সেজন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যতটুকু নেওয়া দরকার, ততটুকু এ মুহূর্তে নিতে পারি নাই।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হক, বিটিআরসির মহাপরিচালক মোস্তফা কামাল, বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান, গ্রামীণফোনের প্রধান করপোরেট অ্যাফেয়ার্স কর্মকর্তা হোসেন, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন, বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) সভাপতি রুহুল আলম আল মাহবুব।

সভা সঞ্চালনা করেন টিআরএনবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম সজল ও সাধারণ সম্পাদক সুবীর কুমার দে।