গ্র্যাজুয়েট হল জিপি অ্যাকসেলেরেটরের পঞ্চম ব্যাচের স্টার্টআপ

স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতিতে জিপি অ্যাকসেলেরেটরের পঞ্চম ব্যাচ সম্প্রতি নিজেদের ধারণার উপস্থাপন করেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2018, 06:54 PM
Updated : 19 Sept 2018, 06:54 PM

গ্রামীণফোন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, জিপিহাউজে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, “এই উদ্যোগ বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পকে সমর্থন দেয় এবং আমি জিপি অ্যাকসেলেরেটরে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি যে তারা চলতি পথে পার্কিং এর স্থান খুঁজে বের করার  সমস্যা সমাধানে কাজ করছে, যা  আমাকে আনন্দিত করেছে।"

গত তিন বছরে গ্রামীণফোন একসেলেরেটর কর্মসূচির অগ্রগতি এবং অংশগ্রহণকারী স্টার্টআপগুলোর মানের কথা বলতে গিয়ে গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল ফোলি বলেন, “এই প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তুলেছে এবং দ্রুত দেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় মেন্টশিপ কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছে।”

অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের হেড অব ডিজিটাল সোলায়মান আলম গ্রামীণফোনের উদ্ভাবনী লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটরের রূপকল্প আর গ্রামীণফোনের রূপকল্প একই। আমরা এখানে, তরুণদের ক্ষমতায়নে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ভৌগোলিকভাবে সীমানা পেরিয়ে তাদের বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করছি।”

জিপি অ্যাকসেলেরেটর একটি উদ্ভাবনী প্ল্যাটফর্ম, যা স্টার্টআপগুলোকে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রশিক্ষকদের সঙ্গে চার মাস মেয়াদী মেন্টরশিপ কর্মসূচির সুযোগ করে দেয়।

নির্বাচিত স্টার্টআপরা ৮ শতাংশ ইক্যুইটির বিপরীতে সিডফান্ডিং হিসেবে পায় ১৫ হাজার মার্কিন ডলার। এছাড়াও, স্টার্টআপগুলো ১১ হাজার ২শ’ মার্কিন ডলার সমমূল্যের অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিস ক্রেডিট (এডব্লিউএস) ও জিপি হাউজে অফিস করার সুযোগ লাভ করে।

চার মাসের এ কর্মসূচিতে দলগুলো দেশ ও দেশের বাইরের প্রশিক্ষক ও শিল্পখাত বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে টার্ম শিট, ভ্যালুয়েশন, ফাইন্যান্সিয়াল মডেলিং ও ব্র্যান্ডিং- এর মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রশিক্ষণের সুযোগ লাভ করে। এর বাইরেও, প্ল্যাটফর্মটি স্টার্টআপগুলোকে ব্যবসার অগ্রগতিতে সম্ভাব্য ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগে সহায়তা প্রদান করে।

এখন পর্যন্ত প্রতিটি স্টার্টআপকে যে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে তার আর্থিক মূল্যমান ৬৫ লাখ টাকা এবং স্টার্টআপগুলোর এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের পর গত ছয় মাসে গড়ে তাদের মূল্যমান চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। 

দেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম তৈরিতে জিপি অ্যাকসেলেরেটরের ভূমিকা সম্পর্কে বলতে গিয়ে গ্রামীণফোনের হেড অব ইকোসিস্টেম মিনহাজ আনোয়ার বলেন, ‘আপনি যদি বাংলাদেশের স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগ করার কথা ভাবেন, তাহলে দেখবেন আমাদের স্টার্টআপগুলোই সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগযোগ্য। আমরা স্টার্টআপ নির্বাচনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কঠোর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গিয়েছি এবং স্টার্টআপগুলোর প্রশিক্ষণে দেশের এবং আঞ্চলিক প্রশিক্ষকদের সাথে কাজ করেছি যাতে করে উদ্যোক্তারা অত্যন্ত দৃঢ়তা ও দ্রুততার সাথে বাজারে প্রবেশ করতে পারে।’

২৬টি স্টার্টআপ নিয়ে এ কর্মসূচি যাত্রা শুরু করেছিল, এর মধ্য থেকে ২০টি স্টার্টআপ সফলভাবে গ্রাজুয়েট হয়েছে।

জিপি অ্যাকসেলেরেটরের পঞ্চম ব্যাচের জন্য এক হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়ে। সেখান থেকে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সেরা পাঁচটি স্টার্টআপ নির্বাচিত হয়।

চার মাসের মেন্টরশিপ কর্মসূচি ও কেপিআই সেশনের পর চারটি স্টার্টআপ সফলভাবে পঞ্চম ব্যাচের কর্মসূচিতে গ্র্যাজুয়েট হয়। এ স্টার্টআপগুলো দেশের সমস্যা নিয়ে কাজ করছে।

স্টার্টআপ ঢাকার প্রধান নির্বাহী এবং অ্যাকসেলেরেটর কর্মসূচির অপারেটিং পার্টনার মুস্তাফিজুর রহমান খান গ্র্যাজুয়েট হওয়া স্টার্টআপগুলোর প্রবৃদ্ধি ও সফলতা নিয়ে তার আনন্দের কথা জানান।

স্টার্টআপগুলো

সার্চ ইংলিশ: ভয় ও লজ্জা কাটিয়ে উঠে সাধারণ মানুষ যেনো তাদের ইংরেজি দক্ষতা বাড়াতে পারে এরই প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে ‘সার্চ ইংলিশ’। ‘জীবন পরিবর্তনে ইংরেজি শিক্ষা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এ প্ল্যাটফর্ম ১৫ লাখের বেশি মানুষকে অনলাইনে ইংরেজি শেখার উন্নয়নে সহায়তা করছে। এক বছরের সময়ের মধ্যে ‘সার্চ ইংলিশ’র এক হাজারের বেশি সফলগাঁথা রয়েছে।

পার্কিং কই: ‘পার্কিং কই’ অ্যাপের মাধ্যমে চালকদের সহায়তা করছে কাছাকাছি পার্কিংয়ের জায়গা খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে। একইসাথে এটা মালিকদের জন্য যাদের পার্কিংয়ের জায়গা এখনও খালি পড়ে আছে তাদের কাছে বিকল্প আয়ের উৎস তৈরি করবে।  

সিওয়ার্ক: ‘সিওয়ার্ক’ মাইক্রো জব প্ল্যাটফর্ম যেখানে নিয়োগদাতারা সহজেই যে কোনো বড় কাজের সমাধান করিয়ে নিতে পারেন। ‘সিওয়ার্ক’ কাজগুলোকে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করে নির্বাচিত ডিস্ট্রিবিউটর পুলের মধ্যে দিয়ে দেয়। এখানের সহস্রাধিক ভেরিফায়েড কট্রিবিউটর তাদের কাজ শেষ করে অনলাইনেই কাজটি সাবমিট করে। ‘সিওয়ার্ক’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে কাজের মান যাচাই করে এবং নিয়োগদাতাদের কাছে সম্পন্ন কাজটি জমা দিয়ে দেয়।

অনুকিট: অনুকিট অ্যাপ এসএমইগুলোকে তাদের দৈনন্দিন যোগাযোগকে কার্যকরী উপায়ে করার ব্যাপারে সহায়তা করবে। শুধু অনুকিট অ্যাপ ব্যবহার করার মাধ্যমে ব্যবসার মালিকরা তাদের ব্যবসার পারফরমেন্সের হিসেব রাখতে পারবে।