একই সঙ্গে ঢাকায় অফিস চালু করেছে তারা। এতদিন ডিস্ট্রিবিউটর সোলার ইলেক্ট্রো বাংলাদেশ লিমিটেডের (এসইবিএল) মাধ্যমে ব্যবসা করছিল শাওমি।
এবার বাংলাদেশে অফিস স্থাপন করে নিজেরাই সরাসরি ব্যবসা করবে তারা। তবে তাদের বাজার সম্প্রসারণে সহযোগী হিসেবে থাকছে এসইবিএল।
মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে শাওমির এই আনুষ্ঠানিক যাত্রার কথা ঘোষণা করেন শাওমির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাওমি ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মানু জৈন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “২০১৮ সালে বাংলাদেশে স্মার্টফোনের মার্কেটে ৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে শাওমির। অন্যান্য স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোর তুলনায় শাওমির জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে, আমাদের প্রবৃদ্ধির পরিমাণও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। আমরা এই বাজারে শেয়ারের পরিমাণ আরও বাড়াতে চাই। তাই আমরা নতুনভাবে এই যাত্রা শুরু করছি।”
তিনি জানান, আনুষ্ঠানিক এই যাত্রার পর ‘সর্বনিম্ন দামে’ ব্র্যান্ডটির সর্বশেষ পণ্য বাংলাদেশে নিয়ে আসবে প্রতিষ্ঠানটি। বাজারজাতকরণ ও সেবার মান বৃদ্ধিতে দেশে শাওমির নিজস্ব আউটলেটের সংখ্যাও বাড়ানো হবে।
এ সময় বিশ্বের অন্যান্য স্মার্টফোন ডিভাইসের বাজারের সঙ্গে শাওমির পণ্যের তুলনামূলক আলোচনা করেন মানু।
তিনি জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরুর সঙ্গে বাংলাদেশে চালু হয়েছে এমআই কমিউনিটি। এই প্ল্যাটফর্মে এমআই ‘ফ্যানরা’ যুক্ত হতে পারবেন এবং প্রযুক্তি পণ্য সম্পর্কে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারবেন।
এছাড়া এমআই ফ্যানরা শাওমি বাংলাদেশের সাইটে প্রবেশ করে শাওমির সর্বশেষ পণ্য ও অফার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
পরে তিনি শাওমির রেডমসি এস-টু ডিভাইসের বিভিন্ন সুবিধা তুলে ধরেন।
তিনি জানান, রেডমি এস-টু’র ফ্রন্ট ক্যামেরা ১৬ মেগাপিক্সেলের। এতে রয়েছে এআই ডুয়েল ক্যামেরা, যা দিয়ে দিনে-রাতে যে কোনো সময়ে ভালো ছবি তোলা ‘সম্ভব হবে’।
“দিনের আলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে রেডমি এস-টু’র ক্যামেরা খুব ভালো মানের ছবি ধারণ করতে সক্ষম। অল্প আলোয় ভালো মানের ছবির জন্য সেন্সরটি পিক্সেল বিনিং টেকনোলজি ব্যবহার করে। যে কারণে ছবির ওপর আলোক স্বল্পতা কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না।
তিনি জানান, রেডমি এস-টুর পেছন দিকে রয়েছে ১২ ও ৫ মেগাপিক্সেলের দুটি এআই ক্যামেরা। ১২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরাটিতে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে অল্প আলোতেও অধিক উজ্জ্বল ছবি তোলা যাবে।
অন্যদিকে ৫ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরাটি দেওয়া হয়েছে ইফেক্ট সমন্বয়ের জন্য।
পোর্ট্রেইট মুডে ফ্রন্ট এবং ব্যাক-দুটি ক্যামেরাই এআই বিউটিফাই সাপোর্ট করবে।
মানু জানান, এই বিউটিফাই চেহারায় মেকাপ চিহ্নিত করতে সক্ষম, এটা সেই মেকআপ অক্ষত রাখে। এছাড়া সেলফি এক্সপ্রেশন আরো সুন্দর দেখাতে এতে রয়েছে ‘বিশেষ প্রযুক্তি’।
রেডমি-এস টু’র ৫ দশমিক ৯৯ ইঞ্চির ফুল স্ক্রিন ডিসপ্লে রয়েছে। এতে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৬২৫ প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। গোল্ড, রোজ গোল্ড, ডার্ক গ্রে- এই তিনটি কালারে রেডমি এস-টু কিনতে পারবেন গ্রাহকরা।
রেডমি- এস টু’র রয়েছে দুটি সংস্করণ। ৩ গিগা ও ৩২ গিগা ভার্সনটি ১৪ হাজার ৯৯৯ টাকায়, ৪ গিগা ও ৬৪ গিগা ভার্সনটি ১৭ হাজার ৯৯৯ টাকায় কেনা যাবে।
এরপর দেশের সব খুচরা বিক্রয় কেন্দ্র থেকেই রেডমি- এস টু’র দুটি সংস্করণই কিনতে পারবেন গ্রাহকরা।
মোবাইল তৈরিতে বাংলাদেশে কারখানা নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মানু জৈন বলেন, “আমাদের এখনই তেমন পরিকল্পনা নেই। আমাদের সক্ষমতা, বাংলাদেশের বাজার পর্যালোচনার পর আমরা এ ব্যাপারে আরো পরে সিদ্ধান্ত নেব।”
বাংলাদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে স্যামসাং ও হুয়াওয়ে বাংলাদেশে কারখানা নির্মাণের কাজ শুরু করছে। বাংলাদেশে উৎপাদন করে সেই পণ্য তারা বাংলাদেশে বাজারজাত করবে।
কদিন আগে এক অনুষ্ঠানে এসে ডাক-টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছিলেন, দেশের বাজারে উৎপাদিত মোবাইল ডিভাইসের সঙ্গে টক্কর দিতে পারবে না দেশের বাইরে উৎপাদিত মোবাইল ডিভাইস।
দেশে মোবাইল ডিভাইস উৎপাদনের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ ‘ক্যাশ ইনসেনটিভ’ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
২০১০ সালে লে জেনের নেতৃত্বে যাত্রা শুরু করা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান শাওমি এখন বিশ্বের ৭০টি দেশে ব্যবসা সম্প্রসারিত করেছে।