বেনাপোলে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি

সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে দেশের বৃহত্তর স্থলবন্দর বেনাপোলের রাজস্ব আদায়ের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

আসাদুজ্জামান আসাদ, বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2018, 06:50 AM
Updated : 5 July 2018, 06:59 AM

২০১৭-১৮ অর্থবছরে এই শুল্কভবনে ৪ হাজার ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৪ হাজার ১৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা আদায় হয়েছে বলে বেনাপোল শুল্কভবনের পরিসংখ্যান শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মাহাবুব হোসেন জানিয়েছেন।

সে হিসাবে গত অর্থবছরের বেনাপোলে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি পরিমাণ ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বা ৪ দশমিক ২৮ শতাংশ।

মাহাবুব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গেল অর্থবছরে ভারত থেকে বিভিন্ন ধরণের ১৮ লাখ ২ হাজার ২৮৪ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি করা হয়েছিল।

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আদায় কম হলেও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের চেয়ে বেনাপোলে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাড়ে ৫ শতাংশের বেশি।

আগের অর্থবছরে বেনাপোলে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৩ হাজার ৮০৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ বেশি ছিল ।

গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার পেছনে বন্দরের অবকাঠামগত উন্নয়ন সমস্যা, পণ্যের নিরাপত্তা শঙ্কা এবং অযৌক্তিক হারে আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির ফলে পাচার বেড়ে যাওয়াকে কারণ হিসেবে দেখছেন বন্দরের ব্যবসায়ীরা।

তবে রাজস্ব কর্মকর্তারা বলছেন, উচ্চ শুল্ক হারের পণ্য কম আমদানি হওয়ার পাশাপাশি শুল্কমুক্ত পণ্যের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় রাজস্ব আদায় কমেছে।

এই বন্দরের আমদানিকারক আবু নিদাল মোহাম্মদ ফয়সাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অযথা হয়রানি, পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে ধরা, ইচ্ছামতো পণ্যের এইচএস কোড পরিবর্তন করে বেশি শুল্ক আদায় করা, ঘুষ ও বন্দরে নিরাপত্তা সমস্যার কারণে ব্যবসায়ীরা অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছে ।

বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বন্দরে পণ্যাগারের অভাবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অবকাঠামো উন্নয়ন হলে বর্তমানে যে রাজস্ব আসছে, তার দ্বিগুণ আসবে।

আমদানি পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে আবার শুল্ক বাড়বে বলে মনে করেন এই সংগঠনের আইন বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান মনে করেন।

তিনি বলেন, গত দুই দশকে বেনাপোল বন্দরে আটটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবসায়ীরা শত শত কোটি টাকার লোকশানের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় ক্ষতিপূরণ না পেয়ে অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়েছে। কেউ আবার এ পথে ব্যবসা বন্ধ করে অন্য বন্দরে গেছেন।

এসব বিষয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম বলেন, বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে জায়গা অধিগ্রহণ ও আমদানি পণ্যের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

“বন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন ধরনের সতর্কতামূলক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রম শুরু হলে এ বন্দর দিয়ে আমদানি সঙ্গে রাজস্বও বাড়বে।”