বিনিয়োগ বাড়াতে শিল্পের নতুন খাত খোঁজার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

শিল্পে বিনিয়োগ বাড়াতে নতুন নতুন খাত খুঁজে বের করতে উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2018, 12:22 PM
Updated : 22 May 2018, 01:23 PM

মঙ্গলবার রাজধানীতে ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০১৬’ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

দেশে শিল্পবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন আবদুল হামিদ।

“টেকসই ও পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের লক্ষ্য অর্জনে দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের টার্গেট রয়েছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলের একটি বড় অংশ বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। কর রেয়াতসহ নানামুখী প্রণোদনার ফলে বাংলাদেশের শিল্পখাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে।”

তিনি আরও বলেন, “জিডিপিতে সার্বিক শিল্পখাতের অবদান ইতোমধ্যে ৩২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত রাখতে হলে বিনিয়োগের নতুন ও সম্ভাবনাময় খাত খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান ৪০ শতাংশে উন্নীত করা।”

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে বিদেশি বিনিয়োগের ‘চমৎকার’ ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, “বাংলাদেশ এখন বিশাল সমুদ্রসীমার অধিকারী। এ সমুদ্রসীমায় বিপুল পরিমাণে মৎস্য, সামুদ্রিক খাদ্য, তেল, গ্যাসসহ প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। এটি দেশে ব্লু-ইকোনোমি সম্প্রসারণে ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। এসব প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে বিদেশি বিনিয়োগের চমৎকার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।

“জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৬ সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশে সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে বলে আমার বিশ্বাস। এ লক্ষ্যে এখন থেকে পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

শিল্পায়নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে বেসরকারিখাতের বিকাশের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “দেশে বেসরকারি খাত যত বেশি শক্তিশালী হবে, শিল্পায়নের ধারা তত বেশি বেগবান হবে। এ বাস্তবতা বিবেচনা করে সরকার বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিয়ে আসছে। বিশেষ করে এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ প্রদান এবং এসএমই নারী উদ্যোক্তাদের জামানতবিহীন ঋণ ও অগ্রাধিকারভিত্তিক প্লট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। আজকের রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার প্রদান এ প্রণোদনারই অংশ।”

অনুষ্ঠানে ছয়টি ক্যাটাগরিতে ১৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার দেওয়া হয়।

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে কুষ্টিয়ার বিসিক শিল্প নগরীর বিআরবি পলিমার লিমিটেড,  গাজীপুরের চিটাগাং ডেনিম মিলস লিমিটেড ও সাভারের বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড।

ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে ময়মনসিংহের ভালুকার রানার অটোমোবাইল লিমিটেড, গাজীপুরের অকো-টেক্স লিমিটেড এবং  সিলেট দক্ষিণ সুরমার মেসার্স আবুল ইন্ডাস্ট্রিজ।

বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে নারায়ণগঞ্জের ফারিহা স্পিনিং মিলস লিমিটেড, কেরানীগঞ্জের স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড, ময়মনসিংহের এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেড। হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার সুপার স্টার ইলেক্ট্রিক্যাল এক্সেসরিজ লিমিটেড এবং ঢাকার মহাখালীর সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড পুরস্কার পেয়েছে।

মাইক্রো শিল্পে- ঢাকার মোহাম্মদপুরের স্মার্ট লেদার প্রোডাক্টস। এছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের তাঁতীপাড়ার ‘কারুপণ্য কুটির শিল্প’ পুরস্কার জিতেছে কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। শিল্প সচিব মো. আবদুল্লাহও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।