বুধবার পোশাক শিল্প রপ্তানিকারক ও প্যাকেজিং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় তিনি এই অভিযোগ তুলে বাজারকেন্দ্রিক তদারকি জোরদারের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ঢাকর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “বন্ড লাইসেন্সধারীর অনেকে এ সুবিধার অপব্যবহার করছেন। তারা প্রয়োজনের বেশি কাপড় বিদেশ থেকে আমদানি করেন। এরপর প্রয়োজনীয় কাপড় রেখে বাকিগুলো দেশের খোলা বাজারে বিক্রি করে দেন। এতে দেশীয় উদ্যোক্তারা সমস্যায় পড়েন।”
ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মাস্টার এলসির মাধ্যমে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি হয়, তার উপর উৎসে কর নিয়ে বাকি অর্থের উপর কর না কাটার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
তা শুনে মোশাররফ বলেন, “অনেক সময় ব্যবসায়ীরা এক্সেসরিজ কেনার নামে এলসি করেন। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় অনেক ডলার দেশের বাইরে থেকে যায়। তাই আমরা এক্সপোর্ট ভ্যালুর উপর উৎসে কর কাটব।”
অনুষ্ঠানে রপ্তানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম ভ্যাট নিয়ে হয়রানির অভিযোগ জানান।
তিনি বলেন, “এনবিআর দুই দিন পরপর ব্যবসায়ীদের চিঠি দিয়ে দু-তিন বছর আগের ব্যালান্স শিট চায়। খরচের ভ্যাট কেন দিলাম না বলে বকেয়া ভ্যাট ও তার সুদসহ বেশি অর্থ চাপিয়ে দেয়।”
ইএবি সহ-সভাপতি বলেন, “রপ্তানি কার্যক্রমের বিভিন্ন স্তরে যে অর্থ ব্যয় হয় তার ওপর আমাদের ভ্যাট দিতে হয়। অন্যান্য খরচের সঙ্গে পণ্য পরিবহন এমনকি আপ্যায়নের উপরও আমাদের ভ্যাট দিতে হয়। এরমধ্যে আমরা মিসিলিনিয়াস নামে একটা কস্ট লিখি। সেটা কি আপনারা জানেন? সেটা হচ্ছে, ঘুষ। সেই ঘুষের উপরও আমাদের ভ্যাট দিতে হয়।”
বন্ডের অডিট নিয়ে সমালোচনা করে হাতেম তা দুই বছর পর পর করার প্রস্তাব দেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “যার যে পরিমাণ ভ্যাট দেওয়ার কথা, তিনি তা দেন না। তাই আমরা অডিট করি। প্রত্যেক অডিটেই কিছু না কিছু অনাদায়ী ভ্যাট পাওয়া যায়।
“দেশের ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো ভোক্তাদের কাছ থেকে ভ্যাট নিলেও সেটি সরকারের কাছে জমা দেন না। কিন্তু নিরীক্ষা করলেই অনাদায়ি ভ্যাট পাওয়া যায়।”
বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি আবদুল কাদের খান তৈরি পোশাকশিল্পের সরঞ্জাম ও প্যাকেটজাত খাতের প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর ৩৫ থেকে ১২ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দেন।
তিনি উৎসে কর দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ৫০ শতাংশে আনার দাবি জানান।