ক্রেডিট কার্ডে চুরি: টাকা ফেরত দিচ্ছে সিটি ব্যাংক

সিটি ব্যাংকের যেসব গ্রাহক কার্ড জালিয়তির মাধ্যমে অর্থ হারিয়েছেন, তাদের টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি ব্যাংকটি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকও নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2018, 04:30 PM
Updated : 19 March 2018, 05:24 PM

সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চুরি যাওয়া ক্রেডিট কার্ডের টাকা ফেরত দেওয়ার কার্যক্রম আমরা কালকে শুরু করব।”

অভিযোগ উঠেছে, ঢাকার বনানীর যে সুপারশপে এই গ্রাহকরা কেনাকাটা করেছিলেন, সেখান থেকে তথ্য চুরি করে কার্ড ক্লোন করে একটি চক্র এটিএম থেকে টাকা তুলে নেয়।

মাসরুর বলেন, “বনানীর একটি আউটলেট থেকে এসব কার্ড ক্লোন হয়েছে। এরপর বিভিন্ন এটিএম থেকে টাকা তুলে নিয়েছে। আমরা মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করেছি।”

মতিঝিল থানায় দায়ের করা মামলার বিষয়ে পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম রাব্বনী সোমবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলার তদন্তে এখনও ‘বলার মতো’ অগ্রগতি নেই।

“একটি প্রতারক চক্র কার্ড ক্লোন করে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাসওয়ার্ড বের করে এই জালিয়াতির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে বাদী তার অভিযোগে ধারণা প্রকাশ করেছেন।”

যেসব এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলা হয়েছে এবং যেসব জায়গায় ওই গ্রাহকরা কেনাকাটা করেছেন, সেখানকার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করছেন বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা রাব্বানী।

সিটি ব্যাংক ছাড়াও আরও চারটি ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা এই জালিয়াত চক্রের শিকার হয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।

কার্ড ক্লোন করে এই রকম একটি এটিএম থেকে তোলা হয়েছিল টাকা

গত ১০ মার্চ ক্লোন কার্ড দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম ও পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) থেকে অর্থ তুলে নেওয়া হয়। গ্রাহকদের অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হয় ব্যাংকগুলো।

একইভাবে ব্র্যাক ব্যাংকের ৯ গ্রাহকের কার্ড জালিয়াতি করে ৬ লাখ ৮৫  হাজার টাকা তুলে নেয় চক্রটি।

যোগাযোগ করা হলে ব্র্যাক ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান জারা জাবীন মাহবুব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ নিয়ে আমাদের তদন্ত চলছে। আর গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।”

কার্ড ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা রয়েছে চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে সব কার্ড চিপ ও পিনযুক্ত করতে হবে। সব ব্যাংক এ প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করলে কার্ড জালিয়াতি কমে আসবে।

বর্তমানে দেশে প্রায় ১০ লাখ ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক রয়েছে। আর ডেবিট কার্ড রয়েছে প্রায় ৬০ লাখ। দেশের ৫৭ ব্যাংকের মধ্যে ৩৯টি ব্যাংক কার্ড সেবা দিচ্ছে।

দুই বছর আগে কার্ড ক্লোন করে এটিএম থেকে টাকা তুলে নেওয়ার সময় ঢাকায় এক চীনা নাগরিককে আটক করা হয়েছিল। তার সঙ্গে আরও অন্তত দুজন চীনা নাগরিক জড়িত বলে তখন পুলিশ জানিয়েছিল।

তারও আগে আরেক জালিয়াতির পর এক ইউরোপীয়কে আটক করা হয়। তখন কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তাও ধরা পড়েছিলেন।