তৃতীয় আইসিটি এক্সপো শুরু

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সফটওয়্যারের পর পর এবার দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হার্ডওয়্যার পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বুধবার ঢাকায় শুরু হয়েছে বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপো।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2017, 07:41 AM
Updated : 18 Oct 2017, 08:30 AM

বুধবার সকালে বঙ্গব্ন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তৃতীয় বারের মতো আয়োজিত এই আইসিটি এক্সপোর উদ্বোধন করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল।

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) যৌথভাবে এই এক্সপোর আয়োজন করেছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইমরান আহমেদ।

সম্ভাবনাময় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বাণিজ্যিক দিক নিয়ে আরও বেশি কাজ করতে মেলার উদ্বোধনীতে আইসিটি ডিভিশনকে আহ্বান জানান পরিকল্পনামন্ত্রী মুস্তাফা কামাল।

তিনি বলেন, “আমাদের যা রিসোর্স আছে, তা সঠিকভাবে ব্যবহার করা গেলে আমরা আরও অনেক বেশি প্রকল্প উদ্ভাবন করতে পারি।”

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আরও বেশি দক্ষ শিক্ষকের প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।

মুস্তাফা কামাল বলেন, “তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে আমাদের আরও বেগ পেতে হবে। আমাদের দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শিক্ষক কোথায়? যারা রোবোটিকস, আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স আর ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) সম্পর্কে দক্ষ নন, তারা কিভাবে দেশে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলবেন! আমরা প্রয়োজনে দেশের বাইরে থেকে শিক্ষক নিয়ে আসব।”

জুনাইদ আহমেদ পলক তথ্যপ্রযুক্তি খাতে হার্ডওয়্যার শিল্পের বিকাশে শুল্ক সুবিধার কথা জানিয়ে বেসরকারি উদ্যোগ বাড়ানোর আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “আমরা হার্ডওয়্যার আমদানি কমাতে চাই, এবার আমরা নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি পণ্য দেশের বাইরে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে চাই।”

পলক বলেন, “এবারের আইসিটি এক্সপোর লক্ষ্য হচ্ছে, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশকে উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিচিত করে তোলা। ”

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আইসিটি ডিভিশনের সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী, বিসিএসের সভাপতি আলী আশফাক, বাংলাদেশ হাই টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম এবং বিসিএসের মহাসচিব সুব্রত সরকার উপস্থিত ছিলেন।

আইসিটি এক্সপোতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শতাধিক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভাগগুলো অংশ নিয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির নতুন সব পণ্য, জীবনশৈলী ও ধারণা উপস্থাপন করছে এসব প্রতিষ্ঠান। ১৩২টি প্যাভিলিয়ন ও স্টলে বিভিন্ন সেবা প্রদর্শন করা হচ্ছে।

আয়োজক প্রতিষ্ঠান বিসিএসের মহাসচিব সুব্রত সরকার বলেন, “অধুনা প্রযুক্তি বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে কিভাবে বদলে দিচ্ছে এই প্রদর্শনীতে আমরা তা উপস্থাপন করছি। বিশেষ করে হার্ডওয়্যার, ম্যানুফেকচারিং ও গবেষণা খাতের সম্ভাবনা, কর্মপ্রচেষ্টা ও রূপকল্প তুলে ধরা হচ্ছে এতে। উপস্থাপন করা হচ্ছে হাই টেক পার্ক ও তথ্যপ্রযুক্তির উৎপাদন অবকাঠামোর অগ্রগতিও।”

জনসচেতনতা সৃষ্টি, তথ্য প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যবান্ধব পরিবেশ তৈরি, তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ ও উদ্যোক্তা তৈরিতে এ প্রদর্শনী সহায়ক হবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, এবারের মেলায় তরুণ উদ্ভাবকদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

এবারের মেলায় আটটি দেশ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ী, প্রতিনিধি ও বক্তা অংশ নিচ্ছেন। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিটুবিতে অংশ নেবেন।

আইসিটি এক্সপোতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য দেওয়া হবে বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড ও সম্মাননা।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী এ মেলা চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। সবার জন্য উন্মুক্ত এই প্রদর্শনী চলবে ১০টা থেকে ৮টা পর্যন্ত।

আইসিটি এক্সপোর দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার এই একই ভেন্যুতে বাংলাদেশে পেইপ্যাল সেবা শুরুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য  ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।