বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রীর দপ্তরে মাইকেল সোমারের নেতৃত্বে জার্মানির ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার বিষয়ক সংগঠন ফ্রিডরিখ-ইবার্ট-স্টিফটাংয়ের (এফইএস) এক প্রতিনিধি দল দেখা করতে এলে তিনি একথা বলেন।
তোফায়েল বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোকে নিরাপদ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
“বাংলাদেশে এখন গ্রিন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে। গ্রিন কারখানা নির্মাণে বিপুল বিনিয়োগ হলেও ক্রেতারা পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করছে না, বরং মূল্য কমছে।”
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল পৃথিবীর যে ১০টি তৈরি পোশাক কারখানাকে এনার্জি অ্যান্ড ইনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন (এলইইডি) সার্টিফিকেশন দিয়েছে, তার ৭টিই বাংলাদেশের।
ক্রেতা গোষ্ঠীর অনুরোধে অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্স ও ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভ দেশের ৩৮০০ তৈরি পোশাক কারখানার মধ্যে ৩ হাজার ৭৮০টি কারখানা পরিদর্শন করে ৩৯টি কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ৪৭টি সংস্কার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
“মানহীন কারখানার সংখ্যা দুই শতাংশের নিচে, যা আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য।”
রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর সরকার এবং কারখানার মালিকদের চেষ্টা ও পদক্ষেপের কারণে আর কোন এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে শ্রম আইন সংশোধন করে সময়োপযোগী করা হয়েছে।
“ইপিজেডে শ্রমিক ইউনিয়নের আদলে ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন গঠনের অধিকার দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকরা সেখানে মালিক পক্ষের সাথে দরকষাকষি করতে পারছে, তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখছে। শ্রম আইন মেনেই এ অ্যাসোসিয়েশন গঠনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এতে শ্রমিক ও বিনিয়োগকারীরা সন্তুষ্ট।”
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের আট ইপিজেডে প্রায় ৪ লাখ শ্রমিক কাজ করছে। বাইরের শ্রমিকদের চেয়েও তারা বেশি বেতন ও সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। এখানকার শ্রমিকরা চান নিজেদের মধ্যে শ্রমিক সংগঠন তৈরী করতে। বাইরের কাউকে তারা নিজেদের নেতা নির্বাচন করতে চান না।
প্রতিনিধি দলকে মন্ত্রী বলেন, জার্মানির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। একক দেশ হিসেবে জার্মানি বাংলাদেশে দ্বিতীয় বড় রপ্তানি বাজার।
ঢাকায় নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত টমাস প্রিঞ্জ, এফইএসর এশিয়া প্যাসিফিকের প্রধান জার্গেন স্টেটেন, বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি ফ্রানজিসকা কর্ন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুন্সী শফিউল হক ও অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মো. শফিকুল ইসলাম এসময় উপস্থিত ছিলেন।