বালি সম্মেলন: অপেক্ষা কাঙ্ক্ষিত সমঝোতার

সম্মেলন শেষ হওয়ার কথা বিকাল ৩টায়। ঘড়ির কাটায় রাত ১১টায়ও চলছে বৈঠকের পর বৈঠক, যার লক্ষ্য সমঝোতা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ১০ হাজার প্রতিনিধির সঙ্গে হাজার খানেক সাংবাদিকেরও অপেক্ষা সেই কাঙ্ক্ষিত সমঝোতার।

আবদুর রহিম হারমাছি বালি (ইন্দোনেশিয়া) থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2013, 04:32 PM
Updated : 6 Dec 2013, 04:32 PM

তবে শেষ মুহূর্তে এই উদ্যোগ সফল হবে কি না- তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না।

রাত সোয়া ১০টার দিকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মুখপাত্র কিথ রকওয়েল  হঠাৎ করে মিডিয়া সেন্টারে এসে বললেন, “বালি সম্মেলনের খসড়া নিয়ে আলোচনা চলছে। একমত হওয়া গেলে আপনাদের জানাবো।”

গত কয়েকদিনের পরিস্থিতি দেখে অনেকেই মনে করেছিলেন, বালি থেকে সবাইকে খালি হাতে ফিরে যেতে হবে। কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকেই শোনা যায়, ইতিবাচক কিছু ঘটতে যাচ্ছে। শেষ মুহূর্তে দফায় দফায় বৈঠক চলছে। তবে বেশিরভাগই বুঝতে পারছিলেন না কী ঘটতে যাচ্ছে।

কিথ রকওয়েল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার পর আবার অপেক্ষা। কখন শেষ হবে এ অপেক্ষা কেউ জানে না। শনিবার পর্যন্ত গড়াতে পারে সম্মেলন- এমন জল্পনা-কল্পনাও শোনা যায় সম্মেলনস্থলে।

কিথ বলেন, “আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।”

সন্ধ্যায় ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী আনন্দ শর্মা সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা অনেক খুঁশি। এটা একটা ঐতিহাসিক দিন। শুধু ভারত নয়, স্বল্পোন্নত, উন্নত সব দেশই এর মধ্য দিয়ে উপকৃত (বেনিফিটেড) হবে।”

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “তিনি শুনেছেন, খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারত তার অনড় অবস্থান থেকে কিছুটা ছাড় দিয়েছে। বাণিজ্য সহজীকরণ চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে।”

“তবে এলডিসি প্যাকেজ নিয়ে কোনো ঝামেলা নেই,” বলেন তিনি।

রাত সাড়ে ৮টায় ডব্লিউটিওর ওয়েবসাইটে বালি ঘোষণার খসড়া দেয়া হয়।

ওই কর্মকর্তা জানান, ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক রবার্তো আজেভেদো ভারত ও আমেরিকার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করে মতপার্থক্য কমিয়ে একটি ঘোষণায় সম্মত হতে চেষ্টা চালান। সে কারণে সকালে অনেকটা হঠাৎ করেই প্রতিনিধিদলের প্রধানদের বৈঠক ডাকা হয়।

ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপ প্রদেশ বালির নাসু দুয়া আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিএনডিসিসি) মঙ্গলবার ডব্লিউটিওর নবম মন্ত্রী পর্যায়ের এই সম্মেলন শুরু হয়।

এবারের সম্মেলনে মূলত তিনটি বিষয়ে একটি ঐকমত্যে পৌঁছানোর মাধ্যমে বালি প্যাকেজ চূড়ান্ত করার চেষ্টা ছিল। সেগুলো হলো- বাণিজ্য সহজকরণ, কৃষি নিয়ে সমঝোতা ও এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর সুবিধা। 

কিন্তু প্রথম দিনই স্পষ্ট হয় যায় যে, বাণিজ্য সহজীকরণ ও কৃষি ভর্তুকি নিয়ে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো বড় ধরনের বিরোধে জড়িয়ে পড়বে।

আর ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা দ্বিতীয় দিন তার ভাষণে ও তৃতীয় দিন সংবাদ সম্মেলনে জোর দিয়ে বলেন যে, খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে কৃষি ভর্তুকির নিয়ম পুনর্বিন্যাস করা না হলে ভারত কোনো সমঝোতা চুক্তিতে সম্মত হবে না।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাণিজ্য সহজীকরণের (ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন) ওপর জোর দিতে থাকে। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র বালি সম্মেলনের আগে জেনেভায় ডব্লিউটিওর সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব আকারে গৃহীত খসড়া পাঠকেই (টেক্সট) অনুমোদনের জন্য অন্যদের ওপর চাপ দিতে থাকে।

গত চার দিন ঘুরেফিরে এসেছে আলোচনা। তবে এখনো সমাধান দেখেনি বালি।