সহযোগীতে বিনিয়োগে অনুমোদন লাগবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের

কিছু এনবিএফআই সহযোগী কোম্পানিতে ‘সীমাতিরিক্ত বিনিয়োগ’ করছে। এতে আর্থিক খাতের শৃঙ্খলায় প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2022, 12:15 PM
Updated : 29 Sept 2022, 12:15 PM

সহযোগী কোম্পানিতে অর্থায়ন, বিনিয়োগ বা ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি সুদ আয় মওকুফ ও খেলাপি ঋণ অবলোপনে এখন থেকে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে।

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়ে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের জন্য সার্কুলার দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) ‘নিয়ম ভেঙে সহযোগী কোম্পানিতে সীমাতিরিক্ত বিনিয়োগ করছে’ বলে তথ্য পাওয়ার পর এ বিষয়ে অনুমোদন নেওয়ার বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপের পদক্ষেপ এল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ও সাবসিডিয়ারিতে দেওয়া ঋণসীমা লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত বিনিয়োগ ও ঋণ দিচ্ছে। আবার সেই ঋণের সুদ মওকুফ ও ঋণ অবলোপন শুরু করেছে।

এতে আর্থিক খাতের ঋণ শৃঙ্খলায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে ধরা পড়ে। এমন প্রেক্ষাপটেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য সহযোগী বা সাবসিডিয়ারি কোম্পানিকে ঋণ ও পুঁজি সরবরাহ করতে পারে। আবার নিজেও কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ধারণ করতে পারে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩ এর ১৪(গ) ধারায় এ বিষয়ে সীমা আরোপ করে বলা হয়েছে, ‘‘কোনো কোম্পানি বা গোষ্ঠীর অনুকূলে উহার মূলধনের ৩০ শতাংশের অধিক ঋণ সুবিধা অনুমোদন করবে না।’’

তবে বিশেষ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন স্বাপেক্ষে মূলধনের সমপরিমাণ অর্থ ঋণ হিসেবে দিতে পারে।

আর আইনের ১৬ ধারা অনুযায়ী, ‘‘আর্থিক, বাণিজ্যিক কৃষি বা শিল্প বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের বা অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠানের যে কোনো ধরনের শেয়ার অর্জন বা ধারনের লক্ষ্যে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান উহার পরিশোধিত মূলধন ও রিজার্ভের ২৫ শতাংশের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় বা ব্যবহার করিতে পারিবে না।’’

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের দেওয়া সার্কুলারে বলা হয়, ‘‘ কতিপয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সাবসিডিয়ারি/সহযোগি প্রতিষ্ঠানসমূহে সীমাতিরিক্ত বিনিয়োগ করছে।

‘‘এছাড়া উক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে প্রদত্ত ঋণের সুদ মওকুফ কিংবা ঋণ অবলোপনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিধি-বিধান লংঘনের ঘটনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এর ফলে আর্থিক খাতের ঋণ শৃঙ্খলা ব্যহত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান সমূহের ঋণ/বিনিয়োগ ফেরত না পাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।’’

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এনবিএফআইগুলোর আমানতকারীদের স্বার্থে ও ঋণ শৃঙ্খলা আনতে নিজস্ব সাবসিডিয়ারি/সহযোগী প্রতিষ্ঠানে ঋণ বা বিনিয়োগ প্রদান, সুদ বা মুনাফা মওকুফ ওবিতরণ করা ঋণ অবলোপনে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন নিতে হবে।

বর্তমানে দেশে অনুমোদিত এনবিএফআই ৩৫টি, যেগুলোর মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২৩টি।