সুন্দরবনের কোল ঘেঁষা শ্যামনগর উপজেলাবাসীর মতো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় টেকসই সমাধান এবং বসবাসযোগ্য পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেন এস এম শাহিন আলম। কিন্তু শুধু স্বপ্ন দেখাতেই সীমিত না থেকে তা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি; হয়ে উঠেছেন উপকূল যোদ্ধা এবং জলবায়ু যোদ্ধা। কেউ কেউ তাকে চেনে উপকূল এক্সপ্রেস নামেও।
গণবিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী এস এম শাহীনের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার পাতাখালি গ্রামে। বাবা-মা আর ছোট বোনকে নিয়েই তার পরিবার।
২০০৯ সালে আয়লার আঘাতে যখন সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় তখন শাহিনের বয়স আট বছর। পড়ছিল চতুর্থ শ্রেণিতে। বাড়ি ছেড়ে প্রায় ছয় মাস আশ্রয় কেন্দ্রে কাটিয়েছিল শাহিনের পরিবার। বেড়িবাঁধ ভেঙে বেনোজলে সয়লাব চারিদিক। লেখাপড়া বন্ধ হয়েছিল। শাহিনের বাবা কাজ হারিয়েছিলেন।
সেই ক্ষত কাটিয়ে উঠতে কয়েক বছর সময় লাগে। কিন্তু তারপর আরও একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে, এবাবে লেগেই আছে। এসব দুর্যগ নিয়েই শাহিনের যাত্রা শুরু হয়।
শুরুতে উপকূলের শিশুদের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরতে আগ্রহী হন তিনি। ছবি তোলেন তার শখের ক্যামেরায়। সেসব ছবি প্রকাশ হয় হ্যালো ডট বিডিনিউজটুয়েন্টি ফোর ডটকমে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে লাইভ এবং ভিডিও পোস্ট করে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের অবস্থা তুলে ধরে সবাইকে সচেতন করার ব্রত নেন শাহিন। তার কাজ দেখে স্থানীয় কয়েকজন যুবক এবং কয়েকটি এনজিও তার পাশে এসে দাঁড়ায়।
দেশের করোনাভাইরাস মহামারী সময়েও থেমে থাকেনি শাহিনের কাজ। মহামারী থেকে সুরক্ষিত থাকার পরামর্শ প্রচার করতেন শাহিন।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ’ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস’ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। সেখানে থেকে টানা তিন বছর সাতক্ষীরা জেলা কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব পালন করেন।
জার্মান ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে তাকে নিয়ে প্রতিবেদন করেছে। শাহিনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ।
উপকূল এক্সপ্রেস শাহিনের আগামীর ভাবনা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ”জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দেশের তরুণদের নেতৃত্বে আন্দোলন গড়ে তুলে এই সমস্যার সমাধানে কাজ করতে চাই।”
আপনার নিবন্ধিত ইমেইল থেকে অপ্রকাশিত লেখা/ছবি/ভিডিও আকারে নাগরিক সংবাদ পাঠান citizen.journalism@bdnews24.com ঠিকানায়।
নিবন্ধিত নাগরিক সাংবাদিক হতে আপনার নাম (বাংলা ও ইংরেজিতে), ঠিকানা, ফোন নম্বর, ইমেইল আইডি এবং ছবি citizen.journalism@bdnews24.com ঠিকানায় ইমেইল করুন।