Published : 01 Jun 2018, 12:57 PM
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বেশ আচমকাই জানালেন যে ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। গত ২৯ মে বিসিবির ও আইসিসির সাবেক সভাপতি মুস্তফা কামাল এ কথা গণমাধ্যমকে জানান। এরপর থেকেই এ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। ভক্তকুল মাশরাফিকে নিয়ে একদিকে যেমন আশান্বিত হচ্ছেন, অন্যদিকে তাদের মাঝে রয়েছে সংশয়ও। এখুনি রাজনীতিতে আসার প্রয়োজন রয়েছে কি মাশরাফির?
যদিও বাংলাদেশে এর আগেও বিভিন্ন খেলোয়ারের রাজনীতিতে আসার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু তারা অবসরের পরে রাজনীতিতে এসেছেন। দেশের বাইরের উদাহরণ দিলে পাকিস্তানের ইমরান খানের সাথে তাকে কিছুটা তুলনা করা যায়। কারণ, মাশরাফির স্বাধীন চিন্তার ও বিপুল জনপ্রিয়তার সাথে মিল রয়েছে ইমরান খানের। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের সাবেক এই অধিনায়ক ১৯৯২ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ের পরে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে রাজনীতির মাঠে আসেন। গঠন করেন স্বতন্ত্র দল তেহরিক ই ইনসাফ (পিটিআই)। দশ বছর লেগে যায় প্রথম সংসদ সদস্য হতে। দীর্ঘ এই পথে ২৫ বছর হেঁটে তার দল এখনো পায়নি রাষ্ট্র পরিচালনার স্বাদ। এমনকি স্বীকৃত বিরোধী দলের মর্যাদাও জোটেনি।
মাশরাফির হয়তো এত কষ্ট করতে হবে না। কারণ ইমরানের মত মাশরাফি নিশ্চয় নতুন দল বানাবেন না। বরং যে দলের মন্ত্রীর মুখ থেকে ঘোষণা এসেছে সে দলের হয়ে নির্বাচন করলে জিতে যাবেন আশা করা যায়। অন্যদিকে আমাদের জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফির রয়েছে একটি স্বচ্ছ ইমেজ। রাজনৈতিক হাতেখড়ি না হলেও সামাজিক জনপ্রিয়তায় মাশরাফির অবস্থান অনেক উপরে। ব্যক্তিজীবনেও যথেষ্ট ভাল মানুষ হিসেবে মাশরাফিকে সবাই জানেন। তাই হয়তো মাশরাফি ইমরান খানের চেয়েও ভালো করবে। বর্তমান রাজনীতিতে যখন খারাপ মানুষের অধিক আনাগোনা, সেই মুহুর্তে রাজনীতিতে মাশরাফির মত স্বচ্ছ ইমেজের লোকের পদার্পন করাটা জরুরি বলেই মনে করি।
কিন্তু তার সাথে একটি প্রশ্ন এসেই যায়। মাশরাফি তো এখনো বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সম্পদ। দলকে এখনো অনেক কিছু দেয়ার আছে তার। এই মুহুর্তে রাজনীতির মাঠে আসা কতখানি সঠিক হবে তার জন্য?
একজন রানিং খেলোয়ারের মাথায় রাজনীতির মত এমন কুটিল ও জটিল বিষয় ঢুকিয়ে দিলে তা তার ক্যারিয়ার ধ্বংসের সহায়ক হবে বলে মনে করি। মাশরাফির মত মানুষ রাজনীতিতে আসুক এটা আমি মনেপ্রাণে চাই। তার জন্য রইলো অনেক শুভকামনা। তবে সেটা যেন হয় জাতীয় দলে তার দায়িত্ব পালন শেষ হওয়ার পর। কারণ অধিনায়ক হিসেবে, সর্বোপরি একজন অভিজ্ঞ খেলোয়ার হিসেবে জাতীয় দলকে এখনো অনেক কিছু দেয়ার আছে তার।