Published : 19 Sep 2017, 08:42 AM
দেশের সব চাল পিঁপড়েরা গর্তে ভর্তি করে রাখলো। পিঁপড়ে গুলোর অদ্ভুত এক শক্তি। কেমন করে যেন আগে থেকে সব দুর্যোগের গন্ধ পেয়ে যায়। বন্যা মহামারীর মতো জিনিস গুলো এই পিঁপড়ে জাতীয় ইতর প্রাণীটি বেশ আগে থেকেই টের পায়। আর আশ্চর্য ভাবে আমরা ডিজিটাল মানুষ গুলো ফেসবুক নিয়ে পরে থাকি। মানুষ হওয়ার এই এক সমস্যা। চাইলেই পিঁপড়ের মতো হওয়া যায় না। আগে ভাগে যদি প্রকৃতির এই অনিয়ম গুলো জানা যেত তাহলে খুব একটা খারাপ হতো না। কিন্তু তাহলে আমরা যে সবাই পিঁপড়ের মতো ইতর জাতীয় প্রাণীতে পরিণত হবো। ফেসবুক চালাবে কে?
সে যাই হোক। পিঁপড়ের মতো না হলেও এই ইতর প্রাণীটিকে অন্নের ধ্বংস করতে দেয়া হবে না। গর্তে ঢুকে হলেও চাল বের করে আনতে হবে। পিঁপড়ের গর্তে ঢুকা বেশ জটিল একটা কাজ। এতো ছোট গর্তে মানুষের ঢোকা প্রায় অসম্ভব। গর্ত বাইরে থেকে ছোট হলেও ভিতরে বেশ ভালো পরিমাণের চাল মজুদ রাখে পিঁপড়ে। এটা মোটেও পিঁপড়ের দোষ না। আপনি যদি সচেতন না হন তাহলে কি পিঁপড়েরও হওয়া বারণ? মোটেই না। পিঁপড়ে পিঁপড়ের কাজ বেশ ভালো ভাবেই করছে।
পিঁপড়ে গুলোর রুচিবোধের তারিফ করতে হয়। সব সেদ্ধ চাল নিমিষেই গর্তে ঢুকিয়ে ফেললো। কি যে আছে এই সেদ্ধ চালে কে জানে? সুতরাং দেশের সেমী ইতর শ্রেণীর প্রাণীদের জন্য দেয়া হলো অধিক পুষ্টির আতপ চাল। কিন্তু এই সেমী ইতর প্রাণীরা কি বুঝবে আতপ চালের মর্যাদা। পিঁপড়ের মতো এরাও সেদ্ধ চালের ভক্ত। না খেয়ে থাকবে কিন্তু আতপ চাল খাবে না। সরকারের এতে কোন দোষ নেই। নীতিনির্ধারকরা খাবার টেবিলে যা দেখে তাই নিয়েই তো নীতি বানায়। খুব সম্ভবত শেষ কবে উনারা সেদ্ধ চালের ভাত খেছেন মনে করতে পারবেন না।
যাই হোক সম্যসা বেশ গুরুতর আকার ধারণ করতে শুরু করেছে। সরকার সাথে সাথে কয়েক হাজার মেট্রিকটন চালের অর্ডার দিয়ে দিলো মায়ানমার থেকে। যে দেশটিকে অবরোধের আওতায় আনার কথা ভাবছে ইউ এন- কিভাবে যে এই চাল ওই দেশ থেকে আনবে সরকার কারো জানা নেই। ধরলাম আনলোই। কিন্তু পেটে কিভাবে যাবে? মনে হয় না সরকার ইতর বা সেমী ইতর জাতীয় প্রাণীর পছন্দ বোধ বা ইমোশন নিয়ে খুব একটা ভাবেন। কারণ আতপ চাল তো আর মায়ানমার থেকে আসবে না। আসবে সিদ্ধ চাল।
পিঁপড়ে বা সরকার কিংবা আতপ বা সিদ্ধ চাল এই রকম সূক্ষ্ম ব্যাপার নিয়ে ভাবার মতো জ্ঞান বা সময় আমাদের থাকলেও পিঁপড়ের নেই এটা আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি। ইতর জাতীয় প্রাণীর একটাই কাজ। কাজ আর সিদ্ধ চালের ভাত খাওয়া। তবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের লোকরা যে পিঁপড়ে না এটাও নির্দ্বিধায় বলা যায়। তা না হলে পিঁপড়ের আগেই উনারা সব চাল নিজেদের গুদামে ঢুকিয়ে ফেলতেন। উনাদের পিঁপড়ের মতো করে চিন্তা করার কথাও না। এত্ত এত্ত লেখা পড়া করে কেউ এতো ক্ষুদ্র একটা প্রাণীর মতো করে ভাববে? ভাবাই যায় না। তবে একটা কাজ করলে মন্দ হয় না। মন্ত্রণালয়ের সবার টেবিলের উপর একটা কাঁচ ঘেরা বাক্সে কিছু পিঁপড়ে ছেড়ে দেয়া যেতে পারে। যাতে এই পিঁপড়ে গুলোর আচরণ দেখে উনারা বুঝতে পারেন কখন কোন চাল গুদামজাত করতে হবে। অনেকটা একুরিয়াম এর মাছের মতো। ব্যাপারটা মন্দ হবে না।