“শুনেছি আজকেও শিক্ষক নেতাদের বসার কথা আছে। দাবি আদায় হয়ে যাবে,” বললেন টাঙ্গাইল থেকে আশা শিক্ষক দীপা রায়।
Published : 22 Jul 2023, 02:07 PM
মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষকদের অবস্থান দ্বাদশ দিনে ঠেকেছে। সরকারের তরফে আশ্বাস না থাকলেও ‘কোনো একজনের’ সঙ্গে বৈঠকের আশায় আছেন শিক্ষকরা।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ব্যানারে গত ১১ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কয়েক হাজার শিক্ষক।
আগের কদিনের ধারাবাহিকতায় শনিবারও মাদুর বিছিয়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা গেছে তাদের। অস্থায়ী মঞ্চে বক্তৃতা করছিলেন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা শিক্ষক প্রতিনিধিরা।
প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরের চাতটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক দীপা রায়। আগে আরও দুইদিন এখানে ছিলেন তিনি।
দীপা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুনেছি আজকেও কাদের সঙ্গে শিক্ষক নেতাদের যেন বসার কথা আছে। দাবি আদায় হয়ে যাবে।”
স্কুলে তালা ঝুলছে জানিয়ে এই শিক্ষক বলেন, “এর আগে একবার ঢাকায় এসে এখানে দুই দিন ছিলাম। গতকাল (শুক্রবার) হেড মাস্টার আবার পাঠিয়ে দিলেন। স্বামী ঢাকায় চাকরি করেন, রাতে সেখানেই থাকছি।”
নোয়াখালীর সুবর্ণচরের থানার হাট মডেল হাই স্কুলের শিক্ষক মো. আব্দুল আউয়াল ছয় দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচিতে আছেন।
তিনি বলেন, “শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, তাতে আমরা আশাবাদী না। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় সব ঠিক হবে, আমরা সেই আশা করছি।
“প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এখনও কেউ যোগাযোগ না করলেও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের পদ্ধতি কী হবে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে বলে আমরা শুনেছি। আশা করি প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করবেন এবং আমাদের দাবি মেনে নেবেন।”
শিক্ষকদের এই অবস্থানের কারণে প্রেস ক্লাবের সামনে দিয়ে একপাশের সড়ক বন্ধ, গাড়ি চলছে অন্য পাশ দিয়ে। সাপ্তাহিক ছুটির দ্বিতীয় দিন দুপুর পর্যন্ত সড়কে গাড়ির চাপ কম বলে তেমন ভোগান্তি হয়নি। তবে রোববার যানজট পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
শিক্ষকদের আন্দোলন কর্মসূচির পাশে সার্ক ফোয়ারার পাশে একদল পুলিশকে অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়। এদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজনে ‘তারুণ্যের সমাবেশে’ যোগ দিতে যাওয়া দলীয় নেতাকর্মীদের দিকেই বেশি দৃষ্টি ছিল তাদের।
অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমদের দাবি, আন্দোলনের গতি আগের থেকে বেড়েছে।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক যে কোনো মুহূর্তে হতে পারে। তবে বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত এটি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
“আন্দোলন আরও বড় হচ্ছে। কারণ আমাদের এই দাবির প্রতি এখন প্রায় সবারই সমর্থন রয়েছে। শিক্ষকরাও শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছেন, সবাই আমাদের সহায়তা করছেন।”
গত বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনরত বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির নেতারা। সেই বৈঠক থেকে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের বিষয়ে আশানারূপ ঘোষণা না আসায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।