কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের ‘ডাক্তার নিয়োগ বিধিমালা’ চূড়ান্ত করতে বলেছে হাই কোর্ট।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও কারা কর্তৃপক্ষকে শূন্য পদে কারা চিকিৎসক নিয়োগের অগ্রগতি এক সপ্তাহের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলীর চৌধুরীর হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।
শুনানিতে কারা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম। রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জে আর খান রবিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান জামান।
শুনানিতে কারাগারের হাসপাতালগুলোতে কতজন চিকিৎসক আছেন - আদালতের এমন প্রশ্নে আইনজীবী শফিকুল ইসলাম বলেন, ১২৫ জন।
বাকি পদগুলো কীভাবে পূরণ করা হচ্ছে - এ প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, “শূন্যপদ পূরণের কাজ চলছে।”
বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক তখন বলেন, “কত বছর লাগবে? ডাক্তারের তো অভাব নেই। নিয়োগ দেন না কেন? কেন্দ্রীয় কারাগারেই দিচ্ছেন না, তাহলে জেলা কারাগারগুলোর অবস্থা তো আরও খারাপ। শুধু চিঠি চালাচালি করছেন।
“ক্ষমতা অপব্যবহার করার জন্য না, মানুষের সেবার জন্য। কারাগারে গরিব মানুষ থাকে, ধনীরা থাকে না। ধনীরা কারাগারে গেলেও তাদের জন্য ডিভিশন ব্যবস্থা থাকে। গরিবদের বাঁচান।”
এরপর কারা চিকিৎসক নিয়োগের বিধিমালা চূড়ান্ত করার আদেশ দিয়ে বিচারক কারা কর্তৃপক্ষের আইনজীবীকে বলেন, “এক মাস পর তারিখ রাখছি। এর মধ্যে চূড়ান্ত করবেন।”
এই রিট আবেদনের সংযুক্তিতে গত ১৩ ডিসেম্বর একটি প্রতিবেদন হাই কোর্টে উপস্থাপন করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৬৮ কারাগার এবং কারা হাসপাতালে ১৪১টি চিকিৎসকের পদের বিপরীতে প্রেষণে ও সংযুক্ত মিলিয়ে মোট ৯৩ জন চিকিৎসক রয়েছে। এরপর আদালত শূন্য পদগুলোতে অবিলম্বে কারা চিকিৎসক নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়ে অগ্রগতি জানাতে বলেন। এর ধারাবাহিকতায় রিট মামলাটি কার্যতালিকায় আসে।
২০১৯ সালে রিট আবেদনটি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তখন আদালত কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা নিয়ে রুল জারি করে।
সেইসঙ্গে কারাগারের চিকিৎসা ব্যবস্থা, চিকিৎসক নিয়োগসহ কারাগারের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। কারা কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন দিয়ে কারাগারে ২৪ জন চিকিৎসক থাকার কথা জানায়।
২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি হাই কোর্ট শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়।
পুরনো খবর