কারাগারের অন্দরের খোঁজ জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট

বাংলাদেশের কারাগারগুলোর ধারণক্ষমতা, বন্দির সংখ্যা, কারা চিকিৎসকের শূন্য পদ ও চিকিৎসকের সংখ্যা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2019, 12:10 PM
Updated : 23 June 2019, 12:11 PM

কারা মহাপরিদর্শককে আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেয়।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, তার সঙ্গে ছিলেন শাম্মী আকতার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খান (রবিন)।

ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি বন্দি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশের কারাগারগুলো। কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন, সারাদেশের কারাগারে ৩৬ হাজার ৬১৪ জন ধারণের ক্ষমতা থাকলেও কারাবন্দির সংখ্যা প্রায় ৮২ হাজার।

কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার

কারাগারে বন্দিদের আইনগতভাবে মানসম্মত থাকার জায়গা নিশ্চিত করার নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং বন্দিদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে হাই কোর্টের দেওয়া রুলে।

চার সপ্তাহের মধ্যে আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব (সুরক্ষা বিভাগ), স্বাস্থ্য সচিব, সমাজ কল্যাণ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও কারা মহাপরিদর্শককে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রিট আবেদনকারী আইনজীবী জে আর খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলাদেশ জেলকোড (সংশোধিত ২০০৬) ৯ ধারা অনুযায়ী দেশের কারাগারগুলোতে যে সংখ্যক চিকিৎসক থাকার কথা সে সংখ্যক চিকিৎসক নেই।

“এছাড়া দেশের কারাগারগুলোতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বন্দি সংখ্যা দুই গুণেরও বেশি। ফলে জেলকোড অনুযায়ী বন্দিদের থাকার জন্য যেটুকু জায়গা দরকার, তা বন্দিরা পাচ্ছে না। এতে কারাগারে বন্দিদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।”

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিভিন্ন সময় এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদনটি করেন তিনি।

তার যুক্ত করা একটি সংবাদ প্রতিবেদনে (গত ১৪ জানুয়ারি প্রকাশিত) বলা হয়, কারাগারে ৩৬ হাজার ৬১৪ জনের থাকার ব্যবস্থা থাকলেও আসামির সংখ্যা প্রায় ৯৫ হাজার। দেশের ৬৮ কারাগারে চিকিৎসকের অনুমোদিত পদ ১২৯টি। চিকিৎসক চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বারবার চিঠি দিলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়. ৬৮টি কারাগারে চিকিৎসকের অনুমোদিত পদ ১২৯টি। এর মধ্যে ঢাকার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে দুজন, চট্টগ্রাম, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, বরিশাল ও গাজীপুর জেলা কারা হাসপাতালে একজন করে চিকিৎসক রয়েছেন।