ধর্ষণে সন্তানের জন্ম দেওয়া এক মায়ের ভর্তি–জটিলতা নিয়ে এই রিট মামলার রায়ে এই নির্দেশনা এল।
Published : 16 Feb 2023, 01:40 PM
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বৈবাহিক অবস্থা জানতে চাওয়া অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে হাই কোর্ট।
একটি রিট মামলার চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দেয়।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত বলছেন, হাই কোর্টের এই রায়ের ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বৈবাহিক অবস্থা জানাতে বাধ্য করা যাবে না।
“আগে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এটা জানতে চাইত, সেটাকে হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণা করেছে। আদালত বলেছে, এরপর থেকে শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই বিষয়টা জানতে চাওয়া যাবে না।”
কোন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই রায় প্রযোজ্য জানতে চাইলে অমিত দাশগুপ্ত বলেন, “যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইউনিভার্সিটি হোক, কলেজ হোক, কোনো বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে এই নিয়ম।”
ধর্ষণে সন্তানের জন্ম দেওয়া এক মায়ের ভর্তি–জটিলতা নিয়ে ২০১৭ সালে প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে দুই আইনজীবী হাই কোর্টে এই রিট মামলা করছিলেন।
সেই ঘটনা তুলে ধরে অমিত দাশগুপ্ত বলেন, “নার্সিং কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে একজন রেপ ভিক্টিম ছিলেন। তার বৈবাহিক অবস্থা জানতে চাওয়া হয়েছে। তার একটা ছেলে ছিল। ফলে সে তো না বিবাহিত, না অবিবাহিত। আবার সে অবিবাহিত, কিন্তু তার তো একটা বাচ্চা আছে।”
“সে কারণে তাকে ভর্তি নেওয়া হচ্ছিল না। তাকে বলা হয়েছিলো স্বামী পরিত্যাক্তা কলাম ফিল আপ করার জন্য। তো, তখন সে সেটা করেনি দেখে তাকে ভর্তি নেওয়া হচ্ছিল না। পরবর্তীতে তার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা রিট ফাইল করেন।”
সেই রিট আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর রুল জারি করে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে বৈবাহিক অবস্থা জানতে চাওয়া কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না এবং এ বিষয়ে একটি নীতিমালা কেন করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।
পাশাপাশি সেই তরুণীকে অবিলম্বে নার্সিং কলেজে ভর্তি করতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
ছয় বছর আগে জারি করা সেই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিকার রায় দিল আদালত।