“দীর্ঘ সময় ধরে অনভিজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে অস্ত্রোপচারের কারণে তার বোনের মৃত্যু হয়েছে,” অভিযোগ ওই নারীর ভাইয়ের।
Published : 27 Feb 2024, 07:28 PM
পিত্তথলির পাথর অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচারের পরদিন ঢাকার উত্তরার একটি বেসরকারি হাসপাতালে এক নারী মারা গেছেন, যার স্বজনদের অভিযোগ ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে।
উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের হাই কেয়ার হাসপাতালে সোমবার দিনের প্রথম ভাগে অস্ত্রোপচারের পরদিন শামীমা আক্তার মুন্নি নামে ওই রোগী মারা যান।
ওই নারীর ভাই মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের অভিযোগ, অস্ত্রোপচার যে চিকিৎসকের করার কথা ছিল তিনি করেননি। আরেকজন চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করেছেন, যার ভুল চিকিৎসায় তার বোনের মৃত্যু হয়েছে।
আটত্রিশ বছর বয়সী মুন্নির বাড়ী গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায়। এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি মুন্নির পরিবার।
তবে হাই কেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভুল চিকিৎসার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, কোনো ভুল চিকিৎসা হয়নি। ছয় ঘণ্টা ধরে চলা অস্ত্রোপচারের পর ওই রোগীর জ্ঞান ফিরেছিল। তিনি স্বজনদের ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন।
মুন্নির ভাই শফিকুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পিত্তথলির পাথর অপসারণের জন্য তার বোনকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। প্রথমে লেপারোস্কপির মাধ্যমে পাথর অপসারণ করার কথা ছিল। তবে পাথরের পরিমাণ বেশি থাকায় তার অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত হয়।সোমবার বেলা ১১টায় শুরুর হওয়া অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল ডা. মহিদুজ্জামান টনির। কিন্তু তার বোনের অস্ত্রোপচার করেন ডা. নাজিবুল ইসলাম নামে আরেক চিকিৎসক।
শফিকুলের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় ধরে অনভিজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে অস্ত্রোপচারের কারণে তার বোনের মৃত্যু হয়েছে।
“ত্রিশ মিনিটের অপারেশন করা হয়েছে ছয় ঘন্টা সময় নিয়ে। অনভিজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে প্র্যাকটিস চালানো টাইপের অপারেশন করানোর কারণেই এই মৃত্যু। হাই কেয়ার হাসপাতাল যদি স্বজনপ্রীতি না করে মহিদুজ্জামান টনিকে দিয়ে অপারেশন করাতেন তবে হয়তো এমন ঘটনা ঘটতো না।”
এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন কি না জানতে চাইলে শফিকুল বলেন, “আমার আত্মীয়স্বজনরা চাচ্ছেন না মামলা করতে। লাশ কাটাছেঁড়া করতে চাচ্ছেন না। আমরা লিখিত অভিযোগ করব কি না এখনও চূড়ান্ত না।”
অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক সহকারী অধ্যাপক ডা. নাজিবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অস্ত্রোপচার ভালোভাবে হয়েছে। রোগীর জ্ঞান ফেরার পর স্বজনরা তার সঙ্গে দেখা করেছেন। কিন্তু দুই দিন পর পর দুবার হার্ট অ্যাটাক হয় শামীমার।
“অ্যানেস্থেসিয়া রিকভার করার পর রোগীর জ্ঞান ফেরে, তার স্বজনরা তার সঙ্গে দেখা করেন। তাদের দিকে তাকিয়েছেন, সাড়াও দিয়েছেন। কিন্তু এরপর রোগীর পোস্ট অপারেটিভ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। সঙ্গে সঙ্গেই রোগীকে আইসিইউতে নিয়ে চিকিৎসা দিই। তার অবস্থার উন্নতিও হচ্ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে দ্বিতীয়বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় ওই রোগীর। এরপর তাকে আর বাঁচানো যায়নি।”