ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে মোংলার ওসির বিরুদ্ধে ‘যৌন হয়রানির’ অভিযোগ

অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি মনিরুল ইসলাম বলছেন, ওই নারী ‘কারো প্ররোচনায়’ এসব অভিযোগ করছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2023, 09:16 AM
Updated : 27 March 2023, 09:16 AM

বাগেরহাটের মোংলা থানার ওসির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক নারী।

তবে ওই অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি মনিরুল ইসলাম বলছেন, ওই নারী ‘কারো প্ররোচনায়’ এসব অভিযোগ করছেন।

সোমবার দুপুরে ঢাকায় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী লিখিত বক্তব্যে বলেন, জমি নিয়ে আদালতে তাদের একটি মামলা বিচারাধীন। এ বিষয়ে মোংলা থানার ওসি মনিরুল ইসলামের কাছে গেলে তিনি ‘উপকারের বদলে কু-নজর' দেন।

“আমার শরীরে হাত দিতে কুণ্ঠা বোধ করেননি ওসি। পাশাপাশি আমাকে উপকার করার কথা বলে থানার তিন তলায় একা সাক্ষাৎ করতে বলেন। তার ওই অনৈতিক ডাকে সাড়া না দেওয়ায় আমাকে এবং আমার পরিবারের লোকজনকে নানাভাবে হয়রানি করছেন।”

ওই নারীর অভিযোগ, হয়রানি করার জন্য শুধু পুলিশই নয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকেও লোক পাঠানো হচ্ছে তার বাড়িতে।

“প্রায় প্রতিদিনই পুলিশ এসে আমাদের বাড়িতে বিরক্ত করছে। আমাদের প্রতিপক্ষের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে আমাদের বসতবাড়ি দখলের চেষ্টা করছে।"

ওই নারী বলেন, জমি নিয়ে বিরোধে তার শ্বশুর মো. ইউছুফ হাওলাদার বাদী হয়ে স্থানীয় কামাল হোসেনের নামে বাগেরহাটের আদালতে একটি মামলা করেন।

“ওই মামলার ইস্যুতে বিবাদী কামাল হোসেনের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ওসি মনিরুলের নির্দেশে তার লোকজন আমাদের বাড়িঘর ভাঙচুর, বাড়ি দখলের চেষ্টাসহ নানাভাবে হয়রানি করছে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “গত বছর ১১ ডিসেম্বর সকালে তদন্তের নামে ওসি মনিরুল আমাদের বাসায় এসে একাই গেটের ভিতরে প্রবেশ করে।

"আমাকে এসে বলে -তোমার বয়স এত কম। এক পর্যায়ে সে আমার হাত ধরে এবং পিঠের উপর তার হাত রাখে। আমি ইতস্তত বোধ করলে সে আমার কাছে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চায়। হোয়াইটসঅ্যাপ নম্বর নেই জানালে থানার তিন তলায় তার রুমে একা একা দেখা করতে বলে।

"দেখা করলে সব সমস্যার সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। এসব কথাবার্তার এক পর্যায়ে অন্যান্য পুলিশ ও লোকজন এসে পড়লে সে সাথে সাথে আচরণ পরিবর্তন করে ফেলে।"

ওই নারী বলেন, সেদিনের পর থেকে ওসি আরো ‘বেপরোয়া’ হয়ে ওঠেন। প্রায়ই বাসায় পুলিশ পাঠিয়ে ‘হয়রানি’ শুরু করেন।  

ওসির লোকজন এখন বসতবাড়ি দখলের চেষ্টা করছে অভিযোগ করে ওই নারী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি মনিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ৯৯৯ থেকে তিনবার কল পেয়ে ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে তিনি দেখেন জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ।

“তখন তাদেরকে আদালতের শরণাপন্ন হতে বলা হয় এবং মারামারি না করার জন্য বলা হয়। ওই নারীর পরিবারের লোকজন প্রতিবেশী কামালের বাড়ির গাছপালা কেটে ফেলে। ওই ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়, তদন্তে গাছ কাটার সত্যতা পাওয়া যায়।”

যৌন হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে ওসি বলেন, “থানায় কোনো নারী ভুক্তভোগী একা এলেও ওসির সঙ্গে দেখা করতে গেলে একজন নারী কনস্টেবল সঙ্গে থাকে। ওই নারী কারো প্ররোচনায় এই অভিযোগ করছে।”