‘দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী’ শুরু বৃহস্পতিবার

বাংলাদেশের ১৪৯ জন শিল্পীর ১৫৬টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনের পাশাপাশি বহির্বিশ্বের ৩৪৪ জন শিল্পীর ৪৯৩টি শিল্পকর্ম থাকবে প্রদর্শনীতে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2022, 03:40 PM
Updated : 6 Dec 2022, 03:40 PM

রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী’র ১৯তম আসর শুরু হচ্ছে আগামী বৃহস্পতিবার।

এদিন সকালে জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে মাসব্যাপী এ উৎসব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন; একাডেমির মঞ্চে সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

১১৪টি দেশের ৪৯৩ জন শিল্পীর ৬৪৯টি শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হবে; প্রদর্শনী চলবে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। এবারের আসর উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী জানান, বাংলাদেশের ১৪৯ জন শিল্পীর ১৫৬টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনের পাশাপাশি বহির্বিশ্বের ৩৪৪ জন শিল্পীর ৪৯৩টি শিল্পকর্ম থাকবে।

এছাড়া বাংলাদেশের ৪৫ জন শিল্পীর অংশগ্রহণে ৩১টি পারফরমেন্স আর্টসহ বিদেশের ৭ জন শিল্পীর ৭টি পারফরমেন্স আর্ট উপস্থাপিত হবে বলে জানান মহাপরিচালক।

প্রতিবারের মতো এবারের উৎসবে গ্রান্ড ও সম্মানসূচক পুরস্কার থাকছে। এতে তিনটি গ্রান্ড পুরস্কারের প্রতিটির অর্থমূল্য ৫ লাখ টাকা এবং তিনটি সম্মানসূচক পুরস্কারের প্রতিটিতে ৩ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।

এছাড়াও বিজয়ীদের ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হবে। উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শিল্পীদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী।

এবারের আসরের চার জুরি জগথ ভিরাসিংহে (শ্রীলঙ্কা), নারসেরিন টর (তুরস্ক), ইয়োনা ব্লাজউইক (যুক্তরাজ্য), জ্যারোস্ল সুচান (পোল্যান্ড) সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জগথ ভিরাসিংহে বলেন, "এশিয়ান আর্ট বিয়েনাল নিসন্দেহে চারুশিল্পের দুই প্রজন্মের মহা মিলনমেলা হতে যাচ্ছে। ১৯৪৭ সালে যে শিল্পীর জন্ম, তিনি যেভাবে বিশ্বকে দেখেছেন বা চিত্রিত করছেন তার সঙ্গে বিস্তর তফাৎ হবে নব্বইয়ের দশকে জন্ম নেওয়া শিল্পীদের। দুই প্রজন্মের শিল্পীদের শিল্পকর্ম দেখার অভূতপূর্ব সুযোগ এসেছে এবার।”

যুক্তরাজ্যের শিল্প সমালোচক জুরি ইয়োনা ব্লাজউইক বলেন, এবারের আসরের ছবি বাছাইয়ে সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মানুষের জীবন ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক কীভাবে শিল্পীরা তাদের চিত্রকর্ম বা পারফরমেন্স আর্টে তুলে আনছেন, সেগুলোতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

কোভিড মহামারীর কারণে ১৯তম আসর আয়োজনে তিন বছরের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে জানিয়ে লিয়াকত আলী বলেন, এ আসরে ১০০টি দেশকে যুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল। মুজিব শতবর্ষের বিষয়টিকে ঘিরেই এই ভাবনাটি আসে।

“এবারের ১৯তম আসরে অংশ নিচ্ছে ১১৪টি দেশের শিল্পীদের শিল্পকর্ম। গতবারের চেয়ে এবার আয়োজনের পরিসর আরো বড় হয়েছে।”

২০১৮ সালে ১৮তম আর্ট বিয়েনালে ৮৮টি দেশ অংশ নিয়েছিল বলে জানান তিনি

এশিয়ার মধ্যে ‘এশিয়ান আর্ট বিয়েনাল’ চারুকলার সবচেয়ে বড় আসর দাবি করে লিয়াকত আলী বলেন, “আমরা কখনও এই বিয়েনালে থিম নির্ধারণ করি না। কারণ আমরা জানি প্রতিটি শিল্পী তার ভেতরে এক শৈল্পিক দর্শন ধারণ করেন যা তাকে পরবর্তীতে শৈল্পিক বুদ্ধিজীবীতে পরিণত করে। আমরা শিল্পের দরজাটিকে আরও খোলা রাখতে চেয়েছি।”

বিশ্বের ১১৪টি দেশ অংশগ্রহণের ফলে পরিসর এশিয়া ছাপিয়ে গেছে; এতে নাম পরিবর্তন করা হবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে লিয়াকত আলী লাকী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমাদের মাঝে আলাপ হয়েছে। তবে আপাতত 'এশিয়ান আর্ট বিয়েনালে' নামটি রাখার পক্ষেই সবাই মত দিয়েছেন।”

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এই আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি সচিব আবুল মনসুর, এশিয়ান আর্ট বিয়েনালের জুরি বোর্ডের সদস্য চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী, পোল্যান্ডের শিল্প সমালোচক জ্যারোস্ল সুচান থাকবেন।