জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং পরিবেশগত সংরক্ষণ বিষয়ে শুরু হয়েছে ছাপচিত্র প্রদর্শনী ও ছাপচিত্র স্টুডিও উপস্থাপনা 'হরিৎ পদ্য'।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকার গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোডে আর্ট স্পেস আলোকি'তে এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়।
এ আয়োজনে অতিথি ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. জিয়াউল হক, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শিল্পী নাসিম আদমেদ নাদভী।
প্রদর্শনীর তত্ত্বাবধায়ক শূন্য আর্ট স্পেসের পরিচালক জাফর ইকবাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমরা তো চাই শিল্পের সঙ্গে মানুষকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে। শূন্য আর্ট স্পেসের উদ্যোগে ২০১৭ সালে 'চলন্তিকা' নামে একটি ভ্রাম্যমাণ স্টুডিও চালু করা হয়। এর মধ্য দিয়ে আমরা সমকালীন ইস্যুগুলো নিয়েও কাজ করার চেষ্টা করছি।"
'চলন্তিকা' ইতোমধ্যে ঢাকার বেশ কয়েকটি স্থানসহ, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ-এ কর্মশালা করেছে বলে জানান তিনি।
আয়োজকরা জানান, মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার গোলাইডাঙ্গা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কলেজ, গোলাইডাঙ্গা প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয়-এর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে তিন দিন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং পরিবেশগত সংরক্ষণ বিষয়ে একটি ছাপচিত্র কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
সেই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী ৩৮৪ জন শিক্ষার্থীর শিল্পকর্মগুলো নিয়ে এবার ঢাকায় এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। প্রদর্শনী চলাকালে আগ্রহী দর্শকদের 'চলন্তিকা'র ভ্রাম্যমাণ স্টুডিওতে ফ্রি কর্মশালা করার সুযোগ থাকছে।
'হরিৎ পদ্য' শিরোনামে এই প্রদর্শনী ও ভ্রাম্যমান স্টুডিও'র উপস্থাপনা চলবে ২২ থেকে ২৪ মার্চ, প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. জিয়াউল হক বলেন, "পরিবেশ দূষণ রোধ করতে ব্যক্তি পর্যায়ে বা পরিবার থেকে সচেতনতা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় যেসব নিয়মকানুন আছে, তারও যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। আমরা সেই চেষ্টা করছি। তবে অনেক ভূমিকা রাখতে হবে পরিবার থেকে।"
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, "২০ বছর পর হয়ত আমরা থাকবো না, কিন্তু আজকের শিশুরা থাকবে। পরিবেশ বিপর্যয়ের শিকার কিন্তু হবে তারা। এজন্য এই আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের মাঝে সেই মূল্যবোধটা দিতে হবে যে আমাদের উন্নয়ন এবং পরিবেশ রক্ষার ভারসাম্যটা জরুরি।"
শিল্পী নাসিম আদমেদ নাদভী বলেন, "আমাদের শিশুদের জন্য কাজ করতে হবে। তারাই তো থাকবে, আমাদের জীবন তো ফুরিয়ে এসেছে। কিন্তু শিশুদের জীবন শুরু। তাদের মাঝে এই বোধটা জাগ্রত করতে হবে, যে এই পৃথিবী তোমাদের। এই আয়োজনটিতে যে শিশুরা যুক্ত হয়েছে, তাদের মাঝে হয়ত কিছুটা প্রভাব ফেলবে। ১৮ কোটি মানুষের দেশে এই আয়োজন হয়ত একটা ছোট্ট প্রচেষ্টা। আমাদের এরকম অনেক অনেক ছোট ছোট প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।"