র্যামন ম্যাগসাইসাই অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশনের বিবৃতিতে বলা হয়, করভি রাখসান্দ বাংলাদেশে সর্বজনীন মানসম্মত শিক্ষার বিকাশে একজন ‘অগ্রপথিক’।
Published : 31 Aug 2023, 02:31 PM
শিক্ষার বিস্তার এবং সামাজিক পরিবর্তনে তরুণদের উদ্বুদ্ধকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের জাগো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা করভি রাখসান্দ পাচ্ছেন চলতি বছরের র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার।
র্যামন ম্যাগসাইসাই অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব ট্রাস্টি বুধবার ২০২৩ সালের পুরস্কারের জন্য করভি রাখসান্দসহ চারজন ব্যক্তির নাম ঘোষণা করে।
সম্মানজনক এই পুরস্কারকে বলা হয় ‘এশিয়ার নোবেল’। করভি রাখসান্দের পাশাপাশি পরিবেশ ও আদিবাসীদের নিয়ে কাজ করা পূর্ব তিমুরের ইগুয়েনিও লেমোস; শান্তি আলোচনায় নারীর ভূমিকা নিয়ে কাজ করা ফিফিপিন্সের মিরিয়াম করোনেল ফেরের এবং ভারতের আসামে দরিদ্রদের ক্যান্সার চিকিৎসায় ভূমিকা রাখা চিকিৎসক রবি কান্নান এবার এ পুরস্কার পাচ্ছেন।
করভি রাখসান্দ বাংলাদেশের জাগো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক। ছয় বন্ধুকে নিয়ে ২০০৭ সালে তিনি গড়ে তোলেন জাগো ফাউন্ডেশন, যা বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
জাগো ফাউন্ডেশন মূলত শিক্ষা নিয়ে কাজ করে। ১১টি স্কুলের মাধ্যমে তারা ১০ জেলায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা দেয়।
র্যামন ম্যাগসাইসাই অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশনের বিবৃতিতে বলা হয়, করভি রাখসান্দ বাংলাদেশে সর্বজনীন মানসম্মত শিক্ষার বিকাশে একজন ‘অগ্রপথিক’। দেশের তরুণদের মধ্য সক্রিয় অংশগ্রহণমূলক সংস্কৃতির বিকাশে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
‘নির্ঝঞ্ঝাট জীবনের নিশ্চয়তা ছেড়ে দরিদ্র ও পিছিয়ে থাকা মানুষদের জন্য কাজ করার যে সাহস ও প্রতিজ্ঞা’ করভি রাখসান্দ দেখিয়েছেন, এই পুরস্কারের মাধ্যমে ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব ট্রাস্টি তার নিষ্ঠার স্বীকৃতি দিচ্ছে।
“শিক্ষাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া এবং সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনে হাজারো তরুণকে উদ্বুদ্ধ করা ক্ষেত্রে দৃঢ় ও দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তিনি। তরুণ প্রজন্ম যে কেবল একটি জাতির স্বপ্নের ধারক ও বাহক নয়, তারা যে তা অর্জনও করতে পারে, তা তিনি দেখিয়েছেন।”
পুরস্কারপ্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় করভি রাকসান্দ বলেন, “এই সম্মাননা শুধু আমার একার না। এ দীর্ঘ পথচলায় যারা আমার সঙ্গে ছিল সকলেই এটার দাবিদার। আমরা আবার প্রমাণ করলাম, তরুণরা কেবল প্রতিশ্রুতি দিয়েই থেমে থাকে না, তারা বাস্তবায়ন করেও দেখাতে পারে।”
ফিলিপিন্সের সপ্তম প্রেসিডেন্ট র্যামন ম্যাগসাইসাইয়ের স্মরণে ১৯৫৮ সাল থেকে এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। এশিয়ার দেশগুলোতে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করা ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে প্রতি বছর সন্মানজনক এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। চলতি বছর র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কারের ৬৫তম বার্ষিকী উদযাপন করা হচ্ছে।
আগামী ১১ নভেম্বর ফিলিপাইনের ম্যানিলার মেট্রোপলিটন থিয়েটারে এবারের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তু্লে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১২ জন র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পেয়েছেন। সর্বশেষ ২০২১ সালে আইসিডিডিআর, বির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদরী বাংলাদেশ থেকে এ পুরস্কার পান।