বাহাদুর শাহ পার্ক: ফের স্থাপনা নির্মাণ দেখে প্রতিবাদের ডাক সংগ্রাম পরিষদের

উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে ২৫ জানুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করবে এই পরিষদ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2023, 05:34 PM
Updated : 18 Jan 2023, 05:34 PM

পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে রেস্তোরাঁ চালানো নিয়ে অসন্তোষের মধ্যে সেখানে আবারও স্থাপনা নির্মাণের প্রতিবাদে সরব হয়েছে ‘ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদ’। 

আগামী শনিবার বিকালে পার্কটিতে সুধী সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন পরিষদের সদস্য সচিব আখতারুজ্জামান খান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “পরিস্থিতি যা, তাতে মনে হচ্ছে এটা দখলের দিকে যাচ্ছে, আমরা প্রতিবাদ চালিয়ে যাব। আমাদের সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ স্যারের নেতৃত্বে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও যোগ দেবেন।”  

পার্কের ভেতরে এবং বাইরের সড়কে কয়েকদিন ধরে নির্মাণ সামগ্রী পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। পাশের এক দোকানি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত বৃহস্পতিবার রাতে পার্কে নতুন করে নির্মাণসামগ্রী আনা হয়। এরপর রাতের বেলা করে রেস্তোরাঁর পাশের ফাঁকা জায়গা পাকা করে সেখানে বসার জায়গা তৈরি করা হয়।” 

গত বছরের শেষ দিকে বাহাদুর শাহ পার্কে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে রেস্তোরাঁ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে পার্কের পরিবেশ নষ্ট হবে বলে উদ্বেগ জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয়রা। 

এরইমধ্যে শরীরচর্চা, বিনোদন ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে চালাতে রেস্তোঁরা নির্মাণ বন্ধের দাবিতে সরব হোন পার্কটিতে শারীরিক কসরত করা চারটি সংগঠনের জোট ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদ।

শুরুতে রেস্তোরাঁটি নির্মাণ করা হচ্ছিল ঢাকার নবাব খাজা আহসানউল্লাহর বড় ছেলে খাজা হাফিজুল্লাহর স্মৃতিবিজড়িত গ্রানাইট পাথরের তৈরি স্তম্ভের পাশেই। এর কিছুটা সামনেই রয়েছে সিপাহী বিদ্রোহের স্মৃতিস্তম্ভ। 

গত ১০ নভেম্বর সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল নগর ভবনে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর স্থাপনাটিকে হাফিজুল্লাহর স্মৃতিস্তম্ভের পেছনে নেওয়া হয়েছে। সেই রেস্তোরাঁর পাশে এখন বসার জায়গা তৈরি করা হচ্ছে।

সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব আখতারুজ্জামান খান বলেন, “গাছে রেস্তোরাঁর লাইটিংয়ের কারণে পশুপাখি বসে না, গাছের পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে প্লাস্টিক রঙ করার কারণে; লাইটগুলো জ্বলে- মনে হয়, এটা একটা বাণিজ্যিক ভবন।

“এটা যে একটা ব্রিটিশবিরোধী শহীদ বেদী তা বোঝার কোনো উপায় নাই পার্কের বর্তমান চিত্র দেখলে। চুলা জ্বালিয়ে খাবার তৈরি করা হচ্ছে। খাবারের প্লাস্টিকের প্লেট, নোংরা পানি ফেলানোর ফলে দুর্গন্ধ হচ্ছে, পার্কে হাঁটা চলার অসুবিধা হচ্ছে।” 

শনিবার সুধী সমাবেশের পাশাপাশি আগামী ২৫ জানুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।