মশক নিধনসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবার মনোন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রর অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। তবে তা শুরু করতে আরও সময় লাগবে এবং বেশ কিছু সংস্কারও করতে হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি সফরে গিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলামের উপলব্ধি হয়েছে, মশক নিধনে ঢাকা ‘ভুল পথে’ হাঁটছে।
সেই সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে সোমবার নগর ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র বলেন, মশক নিধনে এতদিন যে ভুল ছিল, সেটা ‘ইচ্ছাকৃত নয়’। ভুলগুলো শুধরে নিয়ে নতুন করে কাজ শুরু করতে চায় উত্তর সিটি করপোরেশন।
“আমি ভুল স্বীকার না করে কথা টুইস্ট করতে পারতাম। কিন্তু আমি যেটা সেখানে দেখেছি, সেটাই বলেছি। এতদিন কীটতত্ত্ববিদরা যেভাবে বলেছেন, ডিএনসিসি সেভাবেই কাজ করেছ। ভুল সংশোধন করতে হলে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। ভুল ঠিক করতে আমরা ইতোমধ্যে কীটতত্ত্ববিদদের সঙ্গে কথা বলে কাজ করা শুরু করেছি।”
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আতিক বলেন, মিয়ামির মেয়র তাকে জানিয়েছেন, সেখানে ৭২ ধরনের মশা রয়েছে। প্রতি মশার প্রজাতি নির্ণয় করে তারপর ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।
“আমরা বছরের ৩৬৫ দিন সব এলাকায় একই ওষুধ একই মাত্রায় ছিটাই। কিন্তু আমাদের এখানে আমরা এখনও ল্যাবই তৈরি করতে পারিনি। আর পুরো বাংলাদেশে মাত্র ২০ জন কীটতত্ত্ববিদ কাজ করছেন। ল্যাব স্থাপন করা যেহেতু সময় সাপেক্ষ বিষয়, তাই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবের সঙ্গে আমাদের কথা হচ্ছে।”
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন পদক্ষেপের পাশাপাশি মশক নিধনে সর্বস্তরের মানুষের সচেতনতা জরুরি। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের মত বাংলাদেশেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনগুলোকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
“স্মার্ট শহর গড়তে স্মার্ট নীতি চালু করতে হবে। ডিএনসিসি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কিছু নীতি পরিবর্তন করতে চায়। একটা উদাহরণ দিতে চাই। মিয়ামি শহর কর্তৃপক্ষ সবকিছুর কেনাকাটা কেন্দ্রীয়ভাবে সম্পন্ন করে। কিন্তু আমাদের সিটি করপোরেশনে স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রকৌশল বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ আলাদাভাবে ভিন্ন পদ্ধতিতে ক্রয় প্রক্রিয়ায় যায়।
“আইনেও কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের রাজস্ব আইন পুরোনো, ১৯৮৬ সালের। স্মার্ট শহর করতে হলে সবকিছুই স্মার্ট করতে হবে।”
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে উদ্দেশ্য করে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশন আইন যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার করা দরকার।
বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার জে হাস, ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলামসহ ডিএনসিসির কর্মকর্তা এবং কাউন্সিলররা সভায় উপস্থিত ছিলেন।