পিএইচডি জালিয়াতি ঠেকাতে নীতিমালা করবে হাই কোর্টের কমিটি

এই কমিটিকে আগামী তিন মাসের মধ্যে নীতিমালার খসড়া তৈরি করে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2022, 01:17 PM
Updated : 14 August 2022, 01:17 PM

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পিএইচডিসহ উচ্চশিক্ষার গবেষণায় জালিয়াতি বন্ধে নীতিমালা করতে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছে হাই কোর্ট।

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেয়।

ওই কমিটিকে আগামী তিন মাসের মধ্যে নীতিমালার খসড়া তৈরি করে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এ কমিটি নেতৃত্বে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মান্নান।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক সাইফুদ্দিন মো. তারেক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক নাকিব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মাহবুবা নাজনীন এবং একই বিভাগের অধ্যাপক মো. মোস্তফা আকবর।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে আবেদনকারী আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান লিংকন নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

এর আগে আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালার খসড়া জমা দিয়েছিল। তখন ওই খসড়া গ্রহণ করেনি আদালত।

পরে এ বিষয়ে শুনানি শেষে নীতিমালা করতে সাত সদস্যের কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন রিটকারী মনিরুজ্জামান।

তিনি বলেন, “আমাদের প্রস্তাব করা নাম থেকেই আদালত কমিটি গঠন করে দিয়েছে। তিন মাসের মধ্যে নীতিমালার খসড়া দাখিল করতে বলেছে আদালত।”

এ কমিটির যাবতীয় কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

Also Read: ঢাবিতে পিএইচডি থিসিস সংরক্ষণ, মূল্যায়ন হয় কীভাবে: হাই কোর্ট

‘ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার ৯৮% নকল’ শিরোনামে ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপা হয়। সেটি যুক্ত করে জালিয়াতির মাধ্যমে পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রি অর্জন রোধে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে ওই বছরের ২৬ জানুয়ারি রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান।

এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়। দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রি কীভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়, সে বিষয়ে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়। ‘ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার ৯৮% নকল’ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ৬০ দিনের মধ্যে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

পরে গত বছর ইউজিসি আদালতে একটি প্রতিবেদনে দাখিল করে। সেখানে বলা হয়, দেশে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজস্ব আইন, বিধিবিধান ও ব্যবস্থাপনায় পিএইচডি সমমানের ডিগ্রি প্রদান করে থাকে। এ ধরনের ডিগ্রি প্রদানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কোনোরূপ ভূমিকা পালন করে না বা পালন করার সুযোগ নেই।

বর্তমানে দেশে ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। তার মধ্যে ৯৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কমিশন থেকে দেশের কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে পিএইচডি বা সমমানের কোনো ডিগ্রির প্রোগ্রাম, কোর্স, সিলেবাস বা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়নি।