শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি থেকে ক্ষতিপূরণ ছাড়াও বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে হতাহতদের পরিবারের একটি দল।
Published : 28 Jan 2025, 05:21 PM
জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনে ‘শহীদদের’ পরিবারকে এককালীন এক কোটি ও আহতদের ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণসহ বিভিন্ন দাবি আদায়ে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে পরিবারগুলোর একদল সদস্য।
মঙ্গলবার জাদুঘরের সামনে দুপুর ১২টা থেকে আড়াইটার দিকে কর্মসূচি পালন করেছে।
কর্মসূচির মুখপাত্র পরিচয় দিয়ে আমিনুল ইসলাম ইমন সেখানে বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, “এর আগে আমরা প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনসহ দুটো সুশৃংখল কর্মসূচি পালন করেছি। আমরা আজকেও সুশৃংখলভাবে কর্মসূচি পালন করছি। আমরা এখানে যারা দাবি-দাওয়া নিয়ে এসেছি আমরা প্রত্যেকের পায়ে বেড়ি পড়ানো আছে প্রত্যেকেই আহত।
“কতিপয় সুবিধাবাদী লোক বাংলাদেশের জন্ম লগ্ন থেকে ছিল এখনো আছে। আমরা যুদ্ধ করেছি যুদ্ধের ময়দানে সম্মুখ সারির যোদ্ধা ছিলাম। যার কারণে আমাদের গুলি লেগেছে আমরা আহত হয়েছি, আমাদের ভাইরা শহীদ হয়েছেন।”
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে ২০২৪ সালে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। জুলাই শুরু হওয়া এ আন্দোলন দমাতে ব্যাপক দমন-পীড়নের ঘটনা ঘটে।
সরকারের গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে ‘শহীদ’ ও আহত ব্যক্তিদের প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছিল গত ২১ ডিসেম্বর।
সেখানে ৮৫৮ জন শহীদের নামের পাশাপাশি আহতদের তালিকায় ১১ হাজার ৫৫১ জনের নাম ছিল।
১৬ জানুয়ারি ‘শহীদদের’ তালিকা নিয়ে প্রথম গেজেট প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
বুধবার প্রকাশিত প্রথম গেজেটে সারাদেশের ৮৩৪ জন ‘শহীদের’ নাম স্থান পেয়েছে।
তার আগে ১৮ সেপ্টেম্বর জুলাই-অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানে ‘শহীদদের’ পরিবারকে ৫ লাখ এবং আহতদের এক লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার শাহবাগের অবস্থান কর্মসূচি থেকে তোলা দাবি মধ্যে রয়েছে আহত ও ‘শহীদদের’ বিষয়ে সরকারের যে কোনো আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের পরিবারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত, তাদের সবাইকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান, আহতদের রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে-বিদেশে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রয়োজনে আজীবন চিকিৎসার খরচ বহন করা, হত্যকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা, আহত ও ‘শহীদদের’ পরিবারের নিরাপত্তার জন্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, আহতদের পুনর্বাসনে গণঅভ্যুত্থান কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা, চাকরির ব্যবস্থা করা।
কর্মসূচিকে ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে দাবি করে আমিনুল ইসলাম ইমন বলেন, “মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর মত আওয়ামী লীগের দালালদের ছত্র ছায়ায় থাকা কিছু লোকজন আমার প্রিয় সম্মুখ সারির যোদ্ধা আহত ভাইদের ‘আহত লীগ’ বলে এই কর্মসূচিকে অন্যদিকে মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা এ সরকারেরই একটি অংশ, আমাদেরকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলবেন না। আমাদেরকে আহত লীগ বলবেন না। আমাদেরকে যারা আহত লীগ বলবেন তারা নিজেরাই আওয়ামী লীগের দোসরদের মতো আস্তাবলে নিক্ষিপ্ত হবেন।”