আইনজীবীদের হট্টগোল আর বিশৃঙ্খলার মধ্যেই শুনানি নিয়ে দ্রুত আদেশ দিয়ে চলে যান বিচারক।
Published : 18 Sep 2024, 07:14 PM
কোটা আন্দোলনের মধ্যে ঢাকার মোহাম্মদপুরে এক অটোরিকশাচালককে হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার কুষ্টিয়ার সাবেক এমপি সেলিম আলতাফ জর্জকে জিজ্ঞাসাবাদে তিন দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।
তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই আলতাফ হোসেনের আবেদনে বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম সাইফুল ইসলাম তার রিমান্ডের আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে সহযোগিতার জন্য শুনানি করেন আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী। রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে জর্জের জামিন আবেদন করেন আইনজীবী হাফিজুর রহমান তোতা ও মোরশেদ হোসেন শাহীন।
আদালতে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের হট্টগোল আর বিশৃঙ্খলার মধ্যেই শুনানি নিয়ে দ্রুত আদেশ দিয়ে এজলাস থেকে নেমে যান বিচারক।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডে প্রাইমারি স্কুলের সামনে গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক মো. রনি। পরে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রনির মা মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এরপর মঙ্গলবার রাতে লালমাটিয়া এলাকা থেকে জর্জকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
শুনানিতে আইনজীবী ফারুকী বলেন, “এই সেলিম আলতাফ জর্জ কুষ্টিয়ায় তার নির্বাচনি এলাকায় ভোট চুরি করে বারবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। তিনি মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছেন। সেইসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এ আসামি জড়িত ছিলেন। তিনি ওই ঘটনার উস্কানিদাতা ও নির্দেশদাতা।”
জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে আইনজীবী হাফিজুর রহমান তোতা বলেন, “আমার সিনিয়র বিজ্ঞ আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী, তিনি আমাদের বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আমি তাকে শ্রদ্ধা করি। আমরা এখানে শুনানিতে পল্টন ময়দানের ভাষণ দেব না…।”
এ কথা বলার পর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বিএনপির কনিষ্ঠ আইনজীবীরা। আইনজীবী ফারুকী আইনজীবী তোতাকে বলেন, “কীসের পল্টন ময়দান? তোমরা কি স্বৈরাচারী ছিলে না? তোমরা কি ভোট চুরি করে বার সমিতির কমিটি দখল কর নাই।”
আইনজীবী তোতার দিকে ক্ষিপ্ত হয়ে তেড়ে আসেন কয়েকজন আইনজীবী। হট্টগোলের মাঝেই আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন বলেন, “মামলার এজাহারে তার নাম নেই। তাকে সন্দেহবশত ধরে আনা হয়েছে। আমরা তার রিমান্ডের ঘোর বিরোধিতা করছি। আমরা তার জামিন চাই।”
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে জর্জের তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন বিচারক। তখন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে হট্টগোল শুরু করলে দ্রুত এজলাস থেকে নেমে যান বিচারক। বিচারকের ওপরও ‘ক্ষিপ্ত হন’ বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
কনিষ্ঠ এক আইনজীবী আদালতের দুটি রেজিস্ট্রার খাতা ছুঁড়ে মারেন এজলাসে বিচারকের টেবিলের দিকে। কয়েকজন আইনজীবী বিচারকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে এজলাস থেকে বের হয়ে যান।