একদিকে পোশাক কারখানাগুলোর ব্যয় অনেক বেশি হচ্ছে, অপরদিকে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত তথ্য না পেয়ে ধন্দে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা।
Published : 30 Jan 2024, 08:17 AM
তাপপ্রবাহ আর বন্যার কারণে এশিয়ার দেশগুলোর পোশাক খাত ২০৩০ সালের মধ্যে সাড়ে ৬ হাজার কোটি ডলারের রপ্তানি আয় হারাতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে এক গবেষণায়।
শ্রোডার্স এসডিআরএল ও কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ গবেষণা বলছে, বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান ও ভিয়েতনাম জুড়ে কাজ করা ছয়টি আন্তর্জাতিক পোশাক ব্র্যান্ডের সরবরাহ চেইন নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে এ গবেষণায়। তাতে দেখা গেছে, ছয়টি ব্র্যান্ডের সবগুলোই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। একটি ব্র্যান্ড তার বার্ষিক মোট লাভের ৫ শতাংশ পর্যন্ত হারাতে পারে।
গবেষণা প্রতিবেদনের লেখকরা বলছেন, এশিয়ায় চরম আবহাওয়ার কারণে পোশাক রপ্তানিকার এসব দেশের শ্রমিকরা তীব্র গরমে কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে লড়ছেন। একদিকে পোশাক কারখানাগুলোর ব্যয় অনেক বেশি হচ্ছে, অপরদিকে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত তথ্য না পেয়ে ধন্দে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। এ পরিস্থিতিতে এই গবেষণার ফল উভয়ের জন্যই সতর্কবার্তা।
কর্নেল গ্লোবাল লেবার ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক জেসন জুড বলেন, “সরবরাহকারী আর ক্রেতাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি; কিন্তু এ দুটি বিষয়ের (তাপ ও বন্যা) প্রতি কারও নজর নেই। দুর্যোগ প্রশমন, কার্বন নির্গমন ও রিসাইক্লিং– এসব বিষয়ে শিল্প কারখানাগুলোর সাড়া দিতে হবে।”
উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে কোম্পানিগুলোর কাঠামোগত ঝুঁকি বোঝাটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেটি একেবারে প্রাথমিক স্তরেই পড়ে আছে। গুটিকয়েক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পর্যাপ্ত তথ্য প্রকাশ করছে আর অল্প কিছু বিনিয়োগকারী এই ঝুঁকি মূল্যায়ন করছে।
শ্রোডার্সের টেকসই বিনিয়োগ গবেষণার প্রধান অ্যাঙ্গাস বাউয়ার বলেন, “এসব ব্যাপারে খুব কম তথ্য আছে। কিছু (পোশাক) ব্র্যান্ড তাদের সরবরাহকারীদের কারখানার অবস্থান প্রকাশ করে না।”
বৈশ্বিক মোট পোশাক রপ্তানির ১৮ শতাংশ হয় বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান ও ভিয়েতনাম থেকে। কিন্তু বন্যার কারণে এ দেশগুলোতে কারখানা বন্ধ রাখতে বাধ্য হবে কর্তৃপক্ষ। এই চার দেশের ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ পোশাক ও ফুটওয়্যার কারখানাগুলোতে কাজ করে।
গবেষণা বলছে, বিরূপ আবহাওয়ায় উৎপাদনে ধসের ফলে ২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে এশিয়ার এই খাতে রপ্তানি আয় প্রত্যাশার চেয়ে সাড়ে ৬ হাজার কোটি ডলার কম হতে পারে, যা মোট রপ্তানি আয়ের ২২ শতাংশের সমান। এছাড়া কর্মসংস্থানের যে প্রাক্কলন করা হয়েছে, তার চেয়ে সাড়ে ৯ লাখ কম চাকরির সুযোগ তৈরি হতে পারে।
পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ২০৫০ সালের মধ্যে প্রাক্কলন থেকে ৬৮ দশমিক ৬ শতাংশ কমতে পারে রপ্তানি আয়; আর কর্মসংস্থান তৈরি হবে প্রত্যাশার চেয়ে ৮৬ দশমিক ৪ লাখ কম।সংবাদ সূত্র: রয়টার্স
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)